মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নদী-খালে পানি নেই শঙ্কায় বোরো আবাদ

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

নদী-খালে পানি নেই শঙ্কায় বোরো আবাদ

মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে যাওয়া সুতাং নদী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফাল্গুনের শুরুতেই হবিগঞ্জের নদ-নদী ও খাল-বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। যেসব খাল-বিলে পানি আছে তাও খুবই অল্প পরিমাণ। ফলে কৃষিনির্ভর হবিগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। সামনের দিনগুলোতে খরা দেখা দিলে পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল।  কৃষকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর হাওরের নদী ও খাল-বিল খনন হয় না। পলিমাটিতে ভরাট হয়ে গেছে বেশির ভাগ নদ-নদী ও খাল-বিল। তারা বলছেন, পরিকল্পনা করে হাওর অঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী ও খাল-বিল খনন করলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, নদী ও খাল পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর হবিগঞ্জে ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলায়। লাখাই দিয়ে বয়ে গেছে একমাত্র নদী সুতাং। এ নদীর পাড়ে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর বোরো জমি। ফাল্গুনের শুরুতেই নদীটি শুকিয়ে গেছে। যেসব অংশে পানি জমে আছে তা খুবই সামান্য। নদীটি দেখলে মনে হয় যেন ছোট খাল। অনেকাংশে পলি পড়ে জমি ও রাস্তার সমান হয়ে গেছে। ফলে পানি সেচ দিতে না পেরে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। তাদের শঙ্কা, জমিতে নিয়মিত সেচ দেওয়া না গেলে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থা এখন জেলার সর্বত্র। কৃষক ফরহাদ মিয়া জানান, বছরের পর বছর ধরে নদী ও খাল-বিল পলিমাটি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। ধানের চারা লাগানোর পর থেকেই সেচ দেওয়া নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এবার মৌসুমের শুরুতেই হাওরে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা করে খাল-নদীগুলো পুনঃখনন অথবা ড্রেজিং করলে এমন হতো না। আবুল কালাম নামে আরেকজন জানান, খাল-বিলের পানিতে জমির যে উপকার হয় তা নলকূপের পানিতে হয় না। এ ছাড়া সব স্থানে নলকূপের ব্যবস্থাও নেই। তাই ওসব জমি প্রকৃতির ওপর ছেড়ে দিতে হয়। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, যেসব এলাকায় পানির বেশি সংকট আপাতত সেসব স্থানে তিল ও সবজিসহ স্বল্প সময়ের ফসল চাষাবাদ করা যেতে পারে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, সুতাংসহ বেশ কিছু নদী ও খাল পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। পাস হয়ে এলেই কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া কয়েকটি খালের পুনঃখনন কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর