শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সময় বাড়িয়েও অর্জন হয়নি লক্ষ্যমাত্রা

বগুড়ায় আমন সংগ্রহ অভিযান

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সময় বাড়িয়েও অর্জন হয়নি লক্ষ্যমাত্রা

চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে বগুড়ায় সময় বাড়িয়েও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। যেসব মিলার চাল দেওয়ার চুক্তি করেও চাল দেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর সূত্র জানায়, বগুড়ায় ১৭ নভেম্বর থেকে আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। ২৮ টাকা কেজি দরে ধান ও ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তমতে চলতি মৌসুমে জেলায় কৃষকের কাছ থেকে ১০ হাজার ২২২ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়। ১ হাজার ১২০ জন মিলারের মধ্যে ৬৮৯ জন চালকল মালিক ২০ হাজার ৯৮৫ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। চাল সরবরাহে চুক্তি করেননি ৪৩১ জন মিলার। চাল কেনার জন্য চুক্তি না করায় তাদের খাদ্য বিভাগ থেকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৭ মার্চ শেষ দিন পর্যন্ত চুক্তির প্রায় ১৯ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছেন মিলাররা। ১ হাজার ৪৬৫ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেননি। বেশ কয়েকজন মিলার চুক্তি করেও চাল দেননি। আর কৃষকরা কোনো ধান দেননি। বগুড়া খাদ্য বিভাগ জানায়, জেলার ১২টি উপজেলায় কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে ধান কেনার কথা। নিবন্ধনকৃত ৬৩ হাজার ১৫১ জন কৃষকের মধ্যে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন ৭ হাজার ৪৮৫ জন। লটারি করে ২ হাজার ৬৬ জনকে বাছাই করা হয়। নির্ধারিত সময়ে (২৮ ফেব্রুয়ারি) এসব কৃষকের কেউ এক ছটাক ধান বিক্রি করেনি সরকারি খাদ্য গুদামে। এরপর সময় বাড়িয়ে ৭ মার্চ সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন ঘোষণা করা হয়। সে সময়েও ধান সংগ্রহ হয়নি। ধান কেনার শুরুর সময়ে জেলার হাটবাজারে মোটা ধান ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং চিকন ধান ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত মণ দরে বিক্রি হয়েছে। সরকারি দাম ছিল ১ হাজার ১২০ টাকা মণ। সে কারণে কৃষকরা সরকারি ঘরে ধান দিতে আগ্রহী ছিলেন না। দুপচাঁচিয়ার কাথহালী গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বাজারে ধান বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ১ হাজার ২৮০ টাকা। আর সরকার নির্ধারিত মূল্য ১ হাজার ১২০ টাকা। দামের এ ফারাকের জন্য গুদামে ধান দেওয়া হয়নি। কাহালু উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের আবদুল বাছেদ জানান, গুদামে ধান বিক্রিতে ঝামেলা হয়। হাট-বাজারে বিক্রিতে ঝামেলা নেই। এ জন্য অনেকেই গুদামে যেতে চান না। দুপচাঁচিয়ার চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমন মৌসুমের শুরু থেকেই ধানের দাম বেশি ছিল। ধান কিনে চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে মিলে ভেঙে সার্টার করে চাল গুদামে সরবরাহ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। লোকসানের ভয়ে অনেকে সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েও চাল দেননি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, চলতি আমন সংগ্রহ অভিযানে সরকারিভাবে ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তার চেয়ে বেশি দামে বেচাকেনা হয়েছে। এ কারণে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষক আগ্রহী হননি। যেসব লাইসেন্সধারী মিলার চাল দেয়নি তাদের তালিকা করে জেলা খাদ্য অফিস থেকে কারণ দর্শানো নোটিস পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর