শিরোনাম
সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুর্যোগঝুঁকিতে উপকূলের ৫ লাখ মানুষ

রাঙ্গাবালী প্রতিনিধি

দুর্যোগঝুঁকিতে উপকূলের ৫ লাখ মানুষ

উপকূলে নেই পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র। দুর্যোগঝুঁকি নিয়ে পটুয়াখালীর উপকূলে বসবাস করছেন ৫ লাখ মানুষ। এসব এলাকার মানুষের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা আতঙ্কে কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। বিভিন্ন সময় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের অধিকাংশ এখনো রয়েছে অরক্ষিত। বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে উপকূলের বেশির ভাগ আশ্রয় কেন্দ্র।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বলানি থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়ে বাতাসে মিশছে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্ত হচ্ছে। ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে আকস্মিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় নতুন পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। চারদিকে নদী আর সাগর, ভাটা জোয়ারের শ্রোতে থই থই করছে পানি। মাঝখানে রয়েছে ছোট ছোট দ্বীপ। পটুয়াখালীর উপকূলে রাঙ্গাবালীসহ এরকম ছোট-বড় ১৬টি দ্বীপে প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস। এদের বেশির ভাগের বসবাস দু-চালের ঝুপড়ি ঘরে। তাই ঝড়-জলোচ্ছ্বাস এসব এলাকার মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। উপকূলীয় এ অঞ্চলে সিডর, আইলা, মহাসেনের মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার দীর্ঘ বছর অতিবাহিত হলেও পটুয়াখালীতে জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে জাওয়া বেড়িবাঁধের অধিকাংশ এখনো রয়েছে অরক্ষিত। বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছেন উপকূলের বেশির ভাগ আশ্রয় কেন্দ্র। পড়ে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। ঘূর্ণিঝড়ের তা বে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়নি। জনসংখ্যার বিপরীতে গড়ে ওঠেনি পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার। দুর্যোগ সচেতনতা তৈরি হয়নি সাধারণ মানুষের মাঝে। ফলে পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৫ লাখ মানুষ রয়েছে সরাসরি দুর্যোগঝুঁকিতে। চরকাশেমের বাসিন্দা কহিনুর বেগম বলেন, আমরা চরকাশেমে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করি। আমাদের একদিকে নদী, তিন দিকে সাগর। বর্ষা এলে ছেলেমেয়ে নিয়ে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আতঙ্কে। কাউখালী চরের বাসিন্দা সুমন বলেন, আমরা চরে বসবাস করি, নেই কোনো বেড়িবাঁধ। ভাটা-জোয়ারের পানিতে প্রতিনিয়ত ডুবতে হয়। ছোট-বড় কোনো বন্যা এলে আশ্রয় নেওয়ার মতো সাইক্লোন সেল্টার নেই। ফলে বন্যার পানিতে সাঁতার কেটে কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হয়। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ের এখন কোনো মৌসুম নেই। সেহেতু ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা সবসময় সিপিপির সদস্যদের প্রস্তত রেখেছি। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নতুন করে আমাদের নানা পরিকল্পনাও রয়েছে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের ডিন, গবেষক প্রফেসর ড. মো. নুরুল আমিন বলেন, শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়ে বাতাসে মিশছে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্ত হচ্ছে। ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে আকস্মিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে।

পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. মহিববুর রহমান বলেন, অনেক চরেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নেই। এসব এলাকায় সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর