বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

দালালে জিম্মি পাসপোর্টপ্রত্যাশীরা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

দালালে জিম্মি পাসপোর্টপ্রত্যাশীরা

প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালের দেওয়া সাংকেতিক চিহ্ন ছাড়া নেওয়া হয় না কোনো আবেদন। ওই সাংকেতিক চিহ্ন ঘিরে চলছে রমরমা অর্থবাণিজ্য। এ বাণিজ্য হচ্ছে অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী, দালাল এবং বিভিন্ন ট্রাভেলস এজেন্সির যোগসাজশে।

জানা যায়, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা চরম হয়রানির শিকার হন। ঘুষ ছাড়া কলম নড়ে না অফিসের কর্মরত কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর। আবেদন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া পর্যন্ত ধাপে ধাপে হয়রানির শিকার হচ্ছেন জেলার সাধারণ নাগরিক। বড়লেখা উপজেলার জাকির আহমদ বলেন, আবেদন জমা দেওয়ার পর ছয় মাস ধরে পাসপোর্ট অফিসে আসা-যাওয়া করছি পাসপোর্ট পাচ্ছি না। আমার অপরাধ আমি কোনো মাধ্যম ছাড়াই আবেদন করেছিলাম। কমলগঞ্জের ফয়সল আহমেদ বলেন, আমি নিজেই আবেদন জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু জমা নেননি কর্তৃপক্ষ। বেলাল নামে একজন অফিস স্টাফ আমাকে পরামর্শ দেন কোনো মাধ্যম ধরে আসার জন্য। বাধ্য হয়ে উপপরিচালকের কাছে যাই। সেখানেও একি অজুহাত দেখিয়ে আমাকে বিদায় করে দেন। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা একাধিক আবেদনকারী জানান, নির্ধারিত ফি ৫ হাজার ৭৫০ (সাধারণ) এবং ৮ হাজার ৫০ (জরুরি) টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে পাসপোর্ট অফিসে আবেদন দিতে গেলে গ্রহণকারী স্টাফ আবেদনের প্রথম পাতা এবং ভিতরের ৭৭ নম্বর কলাম দেখেন। ওনার মনমতো হলে (সাংকেতিক চিহ্ন থাকলে) জমা নেন। অন্যথায় কাউকে পরামর্শ দেন দালাল অথবা ট্রাভেলসের মাধ্যমে জমা দিতে। আবার কাউকে পাঠান অফিসের দ্বিতীয় স্যারের কাছে। বাধ্য হয়ে মানুষ দালাল অথবা ট্রাভেলসের মাধ্যমে সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৯ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার আর জরুরি পাসপোর্টের জন্য ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত দিচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ফরম হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। হাতেগোনা দুই-একটি বাদে প্রায় সব আবেদন ফরমের কোথাও না কোথাও বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন রয়েছে। যেসব আবেদনকারী দালাল অথবা ট্রাভেলস ছাড়া নিজে আবেদন জমা দিতে চান বিভিন্ন অজুহাতে তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আবেদন ফরমে দেওয়া বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ও কোড দিয়ে কী বুঝায় এমন প্রশ্নের জবাবে এক ট্রাভেলস মালিক বলেন, এসব চিহ্ন ও কোর্ড মানে পাসপোর্ট অফিসে নিশ্চিত ১ হাজার ৫০০ টাকা জমা হয়েছে। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মানিক চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে কথা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।

 

সর্বশেষ খবর