মঙ্গলবার রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টির ফলে জেলা শহর মাইজদীসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে নিচু এলাকায় ফের হাঁটু পরিমাণ পানি উঠেছে। এতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, গত দেড় মাসের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে দখলদারদের থেকে খাল উদ্ধার ও ড্রেনেজ পরিষ্কার করার দাবি জানান স্থানীয়রা।
এদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নোয়াখালীতে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গণশুনানিতে প্রশাসককে তিনি এ নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, নোয়াখালীতে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে টঙ্গীতে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলজটে আটকা পড়ে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন নগরবাসী। গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় স্কুল, কলেজ মাদরাসা, বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যায়। নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া রাস্তাঘাটে খানাখন্দ, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, ড্রেনে ময়লা আবর্জনার স্তূপ, ঠিকাদারদের কাজে অবহেলা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজের ডেলেভারি না দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো নগরীতে জলজট হয়। বছরের পর বছর এমন সমস্যার আবর্তে থাকছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চায় নগরবাসী।
সরেজমিন জানা যায়, রাজধানীর সন্নিকটে অবস্থিত আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ সিটি করপোরেশন গাজীপুর। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই জলজটে দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। স্কুল, কলেজ মাদরাসা, বাসাবাড়িতে পানি জমে যায়। এর মধ্যে টঙ্গী মিলমুন, মরকুন, আরিচপুর, গোপালপুর, পাগাড়, বৌ-বাজার, মধুমিতা, মিলগেট, দত্তপাড়া, আউচপাড়া, গাজীপুরা, বড়বাড়ি, মিরেরবাজার, পূবাইল, গাছা, বাসন, বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী রাসেল বলেন, মানুষ বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা ড্রেনে ফেলছে। যে কারণে ড্রেন দিয়ে পানি সরবরাহ হচ্ছে না। ড্রেন উপচে পানি সড়কে প্রবাহিত হয়। প্রতিদিন লাখ লাখ টন কঠিন বর্জ্য ড্রেনে ফেলছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। জলাবদ্ধতা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রকৌশলী এস এম সামছুর রহমান বলেন, পর্যাপ্ত খাল না থাকায় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিটি রাস্তার পাশে আউটলেটের ব্যবস্থা থাকলে ড্রেনের পানি সহজেই নেমে যেত। তাছাড়া মানুষ এলোমেলোভাবে বাড়িঘর করে পানি বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
টঙ্গী জোনের আঞ্চলিক নির্বাহী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন, ময়লা ফেলার গাড়ি সংকুলানের কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া জনবলের অভাব এবং পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।