নওগাঁর মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে ভুট্টা। সবুজ পাতার আড়ালে যেন উঁকি দিচ্ছে ভুট্টার কাদি। কিছুদিনের মধ্যে পরিপুষ্ট দানায় পরিণত হবে। আবার কোথাও দেরিতে বীজ রোপণ করায় ভুট্টা খেত সেচ ও পরিচর্চা করছেন কৃষক। ভুট্টা চাষে উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম এবং ফলন বেশি। সেই সঙ্গে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে সরকারি প্রণোদনা ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে প্রতি বছরই নওগাঁয় ভুট্টা চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভুট্টা মাঝারি ও উঁচু জমিতে চাষাবাদ হয়। চাষিরা উন্নত জাতের সানসাইন, সুপারসাইন, তাজমেরি ও মিরাক্কেল জাতের ভুট্টার আবাদ করেছেন। এ বছর ১ হাজার ৩০০ কৃষককে বীজ-সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে বেড়েছে ভুট্টা আবাদ। জেলায় এ বছর ভুট্টা আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৮০০ হেক্টরে। যা থেকে ৯৪ হাজার টন উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬০ কোটি টাকা।
ধান ও আলুসহ অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা খেতে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কম। সারা বছর ভালো দাম পাওয়া যায়। লাভজনক হওয়ায় অন্য ফসল কমিয়ে এখন ভুট্টা আবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
ভুট্টা শুধু মানব খাদ্য হিসেবেই নয়, গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সদর উপজেলার ইকরতারা গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, প্রতি বছর তিনি ভুট্টা আবাদ করেন। এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘার ভুট্টা বিক্রি হয় ৪৫-৫০ হাজার টাকা। আত্রাই উপজেলার আবদুল করিম বলেন, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা আবাদ করেছেন তিনি। এ জমিতে আগে সরিষা ও তিল আবাদ করতেন। সেসব ফসল ভালো হতো না। প্রতিবেশীকে দেখে এবার এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। চাষাবাদ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, রোপণ, শ্রমিক ও কাটা-মাড়াইসহ খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। ফলন পাওয়ার আশা করছেন ৪০-৪৫ মণ। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পারবেন।
আত্রাই উপজেলার তিলাবুদুরী গ্রামের কৃষক মিনহাজুল বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। যদি ভালো পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে আবাদ করব।