রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার সঙ্গে রাজস্থলীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ওই স্থানে সেতু নির্মাণের আশ্বাসও দিয়েছেন। এভাবেই কেটে গেছে ছয় দশকের বেশি সময়। ৬৫ বছরেও স্বপ্নপূরণ হয়নি দুই উপজেলার মানুষের। কাপ্তাই ও রাজস্থলীর লাখ লাখ মানুষ এখনো নদী পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একটি মাত্র ফেরি রয়েছে দুই উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের। তাও নানা কারণে প্রায়ই বন্ধ থাকে। সবশেষ ১৩ মে ফেরিঘাটে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করায় চলাচল বন্ধ ছিল টানা পাঁচ দিন।
কাপ্তাই থেকে রাজস্থলী উপজেলা পর্যন্ত সংযোগ সেতু নির্মাণ হলে সড়ক যোগাযোগ উন্নত হবে কাপ্তাই, রাজস্থলী উপজেলা, বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন ও বান্দরবান জেলার। ব্যবসাবাণিজ্য ও জীবনমান উন্নয়ন হবে পাহাড়ি এসব অঞ্চলে। আধুনিকতার ছোঁয়া পাবে লাখ লাখ মানুষ। রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, আপাতত কর্ণফুলী নদীর ওপর সংযোগ সেতু তৈরির কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। ভবিষ্যতে এখানে সেতু হবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের পর বিভক্ত হয়ে যায় রাজস্থলী। বাঁধের কারণে কাপ্তাইয়ের সঙ্গে রাজস্থলী উপজেলার সড়ক তলিয়ে যায় নদীতে। তখন থেকে ফেরির ওপর নির্ভর হয়ে পড়ে কাপ্তাই ও রাজস্থলী উপজেলাবাসী। ফেরি পাড়াপাড়ে ভোগান্তির কারণে নদীতে একটি সংযোগ সেতুর দাবি জানিয়ে আসছিল দুই উপজেলার বাসিন্দারা। স্থানীয় সোহেল চাকমা বলেন, একটি সেতুর অভাবে লাখো মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই। নদী পারাপারে একটি ফেরি থাকলেও প্রায় তা বন্ধ থাকে। সেতু থাকলে যাতায়াতের এতটা কষ্ট হতো না। একই অভিযোগ মো. নাছিরের। তিনি বলেন, ফেরিতে বড় গাড়ি নিয়ে পারাপারে অনেক সমস্যা। প্রায়ই জানজট লেগে যায়। বেশি ভোগান্তিতে পড়েন কৃষক। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় পাহাড়ে উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময় বাজারে সরবারহ করতে পারেন না তারা। ফেরি সময়মতো না পাওয়ায় অনেক ঘাটেই নষ্ট হয়ে যায় তাদের মৌসুমি ফল। শ্যামল চাকমা বলেন, রোগী নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে বসে থাকতে হয়। কখন ফেরি আসবে আর কখন রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাব। অনেক প্রসূতি মাও কষ্ট পান এ ঘাটে। একটি সেতু হলে অনেক আগেই এসব ভোগান্তি দূর হয়ে যেত।