বগুড়া শহরের অধিকাংশ এলাকার ড্রেনই উন্মুক্ত। ঝুঁকি বেড়েছে চলাচলে। ড্রেনের স্লাব না থাকায় রাতের আঁধারে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। যেন মৃত্যু অপেক্ষা করছে মোড়ে মোড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বগুড়া পৌরসভায় কাঁচা ও পাকা মিলিয়ে ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার রয়েছে। ড্রেন আছে ১ হাজার ২১০ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সড়কবাতি রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। শহরে বৃষ্টি হলেই ড্রেনের পানি উপচে ওঠে। নিষ্কাশনে ভালো ব্যবস্থা না থাকায় কখনো দীর্ঘসময় ডুবে থাকছে বেশ কিছু এলাকা। উন্মুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে তখন প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, শেরপুর সড়ক, ঝাউতলা, ফতেহ আলী বাজার, বাদুরতলা, চকযাদু রোড, স্টেশন রোড, মালতীনগর, খান্দার, উত্তর ভাটকান্দি, সাবগ্রাম, ঘুনিয়াতলা, দত্তবাড়ি, ঠনঠনিয়া, উপশহর, চেলোপাড়া, জলেশ্বরীতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে উন্মুক্ত ড্রেন। এসব এলাকার সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন। পৌর শহরের একাধিক বাসিন্দা জানান, এই পৌরসভায় একাধিক মেয়র দায়িত্ব পালন করলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। বৃষ্টি হলে এখনো শহরের জিরো পয়েন্ট জলাবদ্ধতা হয়। ড্রেনের পানি উপচে শহরে প্রবাহিত হয় মধ্য দিয়ে। পথচারীরা ড্রেনের ময়লা আবর্জনা মাড়িয়ে চলাচল করেন। পরিকল্পনা না থাকায় ড্রেন অনেক স্থানেই উন্মুক্ত। এসব স্থান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন। বগুড়া পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার কাজ করা হবে। পৌরসভার কোনো খোলা ড্রেন থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌরসভার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানান, উত্তর ভাটকান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় এখনো আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ পৌরসভা ট্যাক্স আদায় করছে। ড্রেনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে। পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যে টুকু ড্রেন রয়েছে তার ওপর ঢাকনা বা স্লাব না থাকায় মাঝেমধ্যেই পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছোট গেটের পাশে হাঁটার সময় খোলা ড্রেনে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্র সাদাফ আল বিন সাম্য (১৫)। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার রক্ত জমাট বেঁধে জটিল পরিস্থিতি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় অসংখ্য শিক্ষার্থী কোচিং করছে রাত ১১টা পর্যন্ত। এই এলাকায় মোড়ে মোড়ে ড্রেনের ওপর স্লাব নেই। ইচ্ছেমতো ফুটপাত দখল, ভবন তৈরির সময় চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না ছাড়ায় সংকুচিত সড়ক ও সড়কের পাশের ড্রেনে স্লাব না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। পৌরসভা থেকে কিছু আলোর ব্যবস্থা করা হলেও সেই অল্প আলোতে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা। নাটাইপাড়া, চেলোপাড়া ও রাজাবাজার এলাকায় একাধিক ড্রেন দীর্ঘদিন ধরে উন্মুক্ত অবস্থায়। রাতে সেগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।