ঠাকুরগাঁও জেলায় ছাত্রলীগের মিজান ও রনি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে পুরো ঠাকুরগাঁও শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে থেমে থেমে বিচ্ছিন্নভাবে চলে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের ৬৮ প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে গত রবিবার রাত থেকে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী মিজান গ্রুপ জেলা কার্যালয় দখল করে রাখে। পরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উদযাপন করে। অনেক ছাত্রলীগের নেতকর্মী দলীয় কার্যালয়ে রাত্রীযাপন করেন সকালে শহরে র্যালি করার জন্য। অপরদিকে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কমিটি সকাল থেকে প্রতিষ্ঠা বাষির্কীর প্রস্তুতি গ্রহণন করে।
বেলা সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় ঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি রনি শহরের বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে একটি র্যালি বের করে চৌরাস্তায় পৌছালে বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে র্যালিটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৩ ঘন্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে ইট পাটকেলের আঘাতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আহত হয়।
বিদ্রোহী হগ্রুপকে ধাওয়া দিয়ে বের করে দিয়ে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কমিটি দলীয় কার্যালয় দখল করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেনে আনার জন্য ১০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ব্যারিকেট দিয়ে এক রনি গ্রুপকে সরিয়ে দিলে বিদ্রোহী গ্রুপ আবার ব্যারিকেডট ভেঙ্গে শহরের চৌরাস্তা দখলে নিয়ে বিভিন্ন দোকান ভাংচুর করে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তাক আলম টুলুর চেম্বারে হামলা চালায়।
স্থানীয়রা জানায়, ঠাকুরগাঁও ছাত্রলীগের দুইটি গ্রুপ আছে। এক গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন মিজান। তিনি জেলা নেতাদের দ্বারা গঠিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম এমপির ছত্রছায়ায় চলেন। অপরদিকে, কেন্দ্র অনুমোদিত কমিটির সভাপতি রনি। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর -১ আসনের এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের অনুসারী।
কেন্দ্রীয় ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহাবুর রহমান রনি জানান, আমরা ছাত্রলীগের আসল কমিটি। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো সবাইকে নিয়ে। কিন্তু বিদ্রোহী গ্রুপ র্যালিতে হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
বিদ্রোহী গ্রুপের সভাপতি মিজান জানান, আমরা ছাত্রলীগের মাঠের নেতা কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছি। ওই গ্রুপের জেলা ছাত্রলীগ গঠনে কোন অবদান নেই। আমরা দলীয় কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করেছি। রনি গ্রুপের লোকজন আমাদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা তাদের ধাওয়া দেই।
সদর থানার ওসি মশিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুই দলকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৪ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা