কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
আজ দুপুর আড়াইটার দিকে প্রথমবর্ষের উদ্বোধনী ক্লাস ও পরিচিতি সভায় ছাত্রাবাসের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে এ সংঘর্ষ হয়।
আহতরা হলেন- মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিপন চৌধুরীর অনুসারী তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তফা ইমন, মোহাম্মদ হোসাইন, দ্বিতীয় বর্ষের সুদীপ্ত ঘোষ ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মোসাব্বির হোসেন তানিমের অনুসারী চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. রেজাউল করিম জানান, নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস ও পরিচিতি সভা ছিল। এ উপলক্ষে সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
কলেজ সূত্রমতে, পরিচিতি সভা শেষে কলেজের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ৬টি ছাত্রাবাসের ফরম শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর রড ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলে পড়ে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিপন চৌধুরী এবং অপরপক্ষে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোসাব্বির হোসেন। এতে উভয় পক্ষের ৪ জন আহত হয়।
সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়।
কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতা ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোসাব্বির হোসেন তানিম জানান, কলেজ অধ্যক্ষের নির্দেশে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসের ফরম বিতরণকালে রিপনের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী ফরমগুলো ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় ফরম বিতরণের দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ আল নোমান আহত হন।
কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক রিপন চৌধুরী হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস উপলক্ষে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানোর কর্মসূচি নেয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে আমি হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করতে যাই। কিন্তু এরই মধ্যে ফরম বিতরণকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজ ভবনের প্রবেশ পথ আগলানো নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত সুদীপ্ত, মোস্তফা ইমন ও মো. হোসাইনকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল রাশেদ বলেন, ‘বর্তমানে মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের স্বীকৃত কোনো কমিটি নেই। জেলা কমিটিই দেখভাল করছেন কলেজের সাংগঠনিক কর্মসূচি। মূলতঃ ভুল বুঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এনিয়ে রোববার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষকে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সভা ডাকা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহত ৪ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৪ জানুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন