লাল পেড়ে সাদা শাড়ি, কপালে লাল টিপ, খোঁপায় ফুলের সাজ, আর দুহাত ভরা রঙ-বেরঙের চুরি পড়ে বৈশাখী উৎসবে মেতেছিল কিশোরীরা। সেই সাথে বাহারি রঙের পাঞ্জাবি-গেঞ্জি, লুঙ্গি এবং মাথায় গামছা বেঁধে বৈশাখের আয়োজনে নিজেদের শামিল করেছিল শিশু-কিশোরী ও বয়স্করা। ঢাক-ঢোল আর একতারা বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছিল সবাই। সব মিলিয়ে বিপুল উৎসবের মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে। হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ইলিশ, ঢাক-ঢোল, একতারা-দোতরাসহ নানা আল্পনা অঙ্কিত ফেষ্টুন নিয়ে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। রঙ-বেরঙের পোশাকে সেজে শিশু-কিশোররা নেচে গেয়ে মুখরিত করে তুলেছিল গোটা শহর।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্যা র্যালী বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক মোঃ বিল্লাল হোসেন, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হাসান তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিমল কুমার দাস ও পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা প্রমূখ।
এছাড়া জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এনজিও সংস্থা পৃথক পৃথকভাবে শোভাযাত্রা বের করে।
শোভাযাত্রা শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলে পান্তা ভোজের উৎসব। ইলিশ নিষিদ্ধ থাকায় বেশিরভাগ পান্তা ভোজেই ছিল রুই মাছ। এছাড়াও আলু ভর্তা, তিল ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা ও বাদাম ভর্তাসহ বাঙালিয়ানা সব খাবারই ছিল এবারের পান্তাভোজের মূল উপাদান।
এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে একাধিক বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়।
বিকেলে জেলা শহরের নাজমুল চত্বর, পৌরসভা ভবন, মুক্তির সোপান ও উপজেলাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাংলা বর্ষবরণ উৎসব।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ এপ্রিল ২০১৬/ হিমেল-০২