মাদারীপুর সদর উপজেলার দরগা শরীফ এলাকার রহমাতুল্লাহ রাজু। জীবনযুদ্ধে তিনি অনেকটাই সফল। সোনালী লেয়ার মুরগী পালন করে আজ তিনি স্বাবলম্বী।
রহমাতুল্লাহ পেশায় ছিলেন একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। সংসার চলছিল টানাপোড়েনে। ২০১০ সালে ১০০টি সোনালী লেয়ার মুরগী নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। আস্তে আস্তে তার খামারটি বড় হতে থাকে। মাত্র ৬ বছরে মুরগীর সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে দেড় হাজারে। খামারটির আয়াতন বেড়ে হয়েছে ১০০০ স্কয়ার ফুট। শহরের বাড়িতে জায়গা কম হওয়ায় ছাদেই মুরগির খামার তৈরি শুরু করেন। বর্তমানে বাড়ির পাশের জমি ক্রয় করে মুরগী পালন করছেন। ফার্মে প্রতিদিন ডিম সংগৃহীত হয় ৯০০টি। প্রতিহালি ডিম পাইকারি বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত।
একদিনের বাচ্চা মুরগি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে (বাচ্চার ওজন ২০-৩০ গ্রাম) কিনে এনে এখানে ১৩-১৪ মাস পালন করা হয়। এরপর মুরগির ওজন প্রায় দেড়কেজি থেকে পৌনে দুই কেজি হলে প্রতি কেজি গড়ে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি করা হয়। বাচ্চার বয়স ৬ মাস পর থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং একটানা প্রায় ৭-৮ মাস ডিম দিয়ে থাকে।
এদিকে রহমাতুল্লাহ রাজুর সোনালী লেয়ার মুরগী পালনে সাবলম্বি হওয়া দেখে তার এলাকার অনেকে সোনালী লেয়ার মুরগী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রহমাতুল্লাহ রাজু জানায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০০৬ সালে ৫০-৬০টি কোয়েল নিয়ে পালন শুরু করি। দিন দিন কোয়েল বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ৫০০টি কোয়েল হয় তার খামারে। কোয়েল পর্যাপ্ত পরিমানে ডিম দিলেও ডিম বেচার মত ক্রেতা পাওয়া যায়নি। ফলে এক পর্যায়ে কোয়েল পালন বন্ধ করে দিতে হয় রহমাতুল্লাহ রাজুকে।
কোয়েল পালন বন্ধের কিছুদিন পরে রাজু সোনালী লেয়ার মুরগী পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ১০০টি মুরগী দিয়ে খামারটি শুরু করে লাভবান হলে পরবর্তীতে খামারে মুরগী বাড়াতে থাকেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে ১৫০০ মুরগী রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, রহমাতুল্লাহ রাজু যে সোনালী লেয়ার মুরগীর খামারটি করেছে তা খুব ভাল একটি খামার। আমাদের দেশের বেকার যুবক সবাই যদি রহমাতুল্লাহ রাজুর মত একটি করে খামার স্থাপন করে এবং প্রাণিসম্পদ অফিসের সাথে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে খামারের পরিচর্যা করে তাহলে বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে অনেকেই।
বিডি প্রতিদিন/ ২ সেপ্ট: ২০১৬/হিমেল-০১