দীর্ঘ দুই মাস সীমানা জটিলতার কারনে বন্ধ থাকা সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবশেষে আগামী ৩১ অক্টোবর সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সাভার সদর ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা। অন্যদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় শেষ হয়ে আসলেও ঠিকমতো প্রচারনায় নামতে পারেনি বিএনপি। নির্বাচনী প্রচারনায় নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির দলীয় প্রার্থীকে।
সূত্র জানায়, গত ৪ জুন সাভার উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সীমানা জটিলতার কারনে সাভার সদর ইউনিয়নকে বাদ রেখেই ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়। সাভারের চাপাইন এলাকার ইসমাইল হোসেন নামের এক ব্যক্তি সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাথে পৌরসভার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করেন। তার এই রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ওই ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে সীমানা জটিলতা নিরসন হওয়ায় নির্বাচন অফিস সাভার সদর ইউনিয়নে আগামী ৩১ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার নির্দেশ দেন।
এদিকে ব্যাপক প্রচারনার পর সীমানা জটিলতার কারনে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশায় পড়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অবশেষে সেই জটিলতা কাটিয়ে ওঠায় নির্বাচনী প্রচারনা তুঙ্গে উঠেছে। প্রতিদিনই আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সাভার সদর ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা।
শনিবার বিকেলে সরেজমিনে সাভার সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, সাভার সদর ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি মহল্লা নির্বাচনী পোষ্টার ব্যানারে ঢেকে ফেলা হয়েছে। সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সোহেল রানা নৌকা প্রতীকে সকাল-সন্ধ্যা ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত রয়েছেন। চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা।
অন্যদিকে নির্বাচনের শেষ মূহুর্তে আওয়ামী লীগের প্রচারনা তুঙ্গে থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করছেন বিএনপি প্রার্থী। পুরো ইউনিয়নের কোথাও বিএনপি প্রার্থীর তেমন কোন ব্যানার-ফেস্টুন দেখা যায়নি। পাড়া-মহল্লায় প্রচারনায় দেখা যায়নি তার ও দলের নেতাকর্মীদের।
তবে এ ব্যাপারে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার লাগানো ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলছে। নির্বাচনী প্রচারনায় মাঠে নামা তো দূরের কথা, ঘর থেকেই বের হতে দিচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে রাজনীতিক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ ১৮টি মামলা রয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে রাখে। পুলিশ দিয়ে তাকে হয়রানীর অভিযোগও করেন বিএনপির ওই প্রার্থী।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সোহেল রানা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোস্তফা দুই মেয়াদে প্রায় ১৫ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। টানা ১৫ বছর চেয়ারম্যান থাকার পরও এলাকায় তেমন কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগাতে পারেননি। এ কারনে সাভার সদর ইউনিয়নের ভোটাররা তাকে এবার প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী ৩১ অক্টোবর নির্বাচনে তার নিশ্চিত পরাজয় জেনে তিনি এসব উল্টো পাল্টা কথা বলছেন।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মমিন মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী সোমবার সাভার সদর ইউনিয়ন ও জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়া আশুলিয়ার দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ নির্বাচনের সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সাভার সদর ইউনিয়নে ২৯ হাজার ১৫ জন ভোটার ১৫টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সাভার মডেল থানার সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাভার সদর ইউনিয়নে সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ