লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় বেড়িবাঁধের দু’পাশের মানুষের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। তাদের নেই কোন স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, পড়ালেখার জন্য নেই কোন বিদ্যালয়। অন্ধকার থেকে আলোর পথে বেরিয়ে আসার সব পথই যেন রুদ্ধ।
জানা যায়, বন্যা থেকে বাঁচার জন্য সরকার ৪৫ বছর আগে উপজেলার চরভৈরবী থেকে চরলক্ষ্মী পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। তখন থেকেই নদী ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা, স্থানীয় বাস্তুহারা ও ভূমিহীন মানুষ এই বেড়িবাঁধের দু’পাশে বসতি গড়ে তোলেন।
বর্তমানে এই বেড়িবাঁধের উপর প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পরিবার বাস করছে। বসবাসকারী পরিবারগুলো বিদ্যুৎ, টয়লেট ব্যবস্থা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় নদী ও খাল পাড়ে মলমূত্র ত্যাগ করে। একই স্থানে নদীতে গোসলসহ ঘরের প্রয়োজনীয় কাজ করতে বাধ্য হয়। এছাড়াও শিশুদের জন্য কোন বিদ্যালয় না থাকায় ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে।
চরবংশীর মোল্লার হাট ও চরভৈরবী বেড়িবাঁধের ওপর বাসিন্দা সেতারা ও ছালেহা বেগমসহ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আমরা এই বেড়িবাঁধের উপর বসবাস করি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, ল্যাট্রিন না থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে নদীতে মলমূত্র ত্যাগ করতে হয় এবং গোসল, রান্নাসহ ঘরের সব কাজে এই পানি ব্যবহার করতে হয়। আমরা অসহায় গরীব বলে সরকারি কোন জমি বা সহযোগীতা পাই না। জনপ্রতিনিধিদেরকে শুধু ভোটের সময় দেখা যায়। তাই আমরা স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর সদরের একাংশ) এমপি ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান বলেন, ‘সরকারি ও তার নিজের বরাদ্দ থেকে এসব মানুষ যেন সুবিধা বঞ্চিত না হয় সে দিকে তার নজর রয়েছে। তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা যেন পেতে পারে সে জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন জানাব।’
বিডি প্রতিদিন/৩০ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল-১১