বগুড়ায় দুর্বৃত্তরা এবার প্রায় ৫০ শতক জমির ফলজ বৃক্ষ ও কলাগাছ কেটে ফেলেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা ফলজ ও কলাগাছগুলো কেটে ফেলে রেখে যায়। বুধবার ভোরে জমির মালিক কৃষক আফজাল হোসেন ক্ষেতে লাগানো কলাগাছ কাটা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের গোয়ালজানি গ্রামে অবস্থিত কৃষক আফজাল হোসেন প্রায় ৫০ শতক জমিতে বাগান গড়ে তোলেন। সে জমিতে কলা, আম, নারিকেল, সুপারীসহ বিভিন্ন ফলজ গাছের চাষ করেন। গাছগুলো সবে মাত্র লেগে উঠেছে। বাড়ন্ত সময়ে এসে একদল দুর্বৃত্ত ফলজ গাছগুলো ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে সাবাড় করে দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আফজাল হোসেন জানান, গেল কয়েকমাস আগে তার নিজস্ব ৫০শতক জমির ওপর একটি বাগান গড়ে তোলেন। বাগানে প্রায় ৫০টি উন্নতজাতের কলাগাছ, ১০টি নারিকেল গাছ ও ৫০টি সুপারির গাছ লাগান। এছাড়া আমসহ রকমারি ফলজ ও বনজ গাছ লাগানো হয়েছে। নিয়মিতভাবে তিনি বাগানটি দেখাশোনা ও পরিচর্যা করেন। কিন্তু গেল মঙ্গলবার গভীর রাতে কে বা কারা বাগানে লাগানো সবগুলো গাছের গোড়া কেটে ফেলে। বুধবার বাগানে প্রবেশ করেই এই দৃশ্যটি দেখতে পান। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান কৃষক আফজাল হোসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জামিল হোসেন, আবির মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আফজাল গাছগুলো চাষ করে আগামীর স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। গাছগুলোতে ফলন ধরলে সে ফল বিক্রি করে তার সংসারে গতি বাড়তো। প্রতিদিনি সে গাছগুলোর যত্ন করতো। কিন্তু কে বা কারা গাছগুলো কেটে আর্থনৈতিকভাবেও তার ক্ষতি সাধান করেছে। গাছ কেটে ফেলার সংবাদে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। এ কেমন শত্রুতা। তারা আরও জানান, পরিচর্যা আর রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সেই ছোট্ট চারা গাছগুলো লাঠি ভর করে বড় হয়ে উঠতে থাকে। আর তাই বাগানটি নিয়ে কৃষক আফজাল নানা স্বপ্ন বুনছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা এক রাতেই সেই সাজানো গোছানো তার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। লাঠিগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও গাছগুলো আর দাঁড়িয়ে নেই। ধারালো অস্ত্রের কোপে দুর্বৃত্তরা সেই গাছগুলো মাটিতে ফেলে দিয়েছে। উন্নতজাতের কলা, নারিকেল, সুপারি ও আম কোন গাছই দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের কোপ থেকে রক্ষা পায়নি।
বগুড়ার শেরপুর থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল জাব্বার জানান, এ ধরনের কোন খবর তার জানা নেই। এছাড়া ওই ঘটনায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ-১৮