পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে উৎসবের আমেজ বইছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায়। ২০০৪ সালে গঠিত এ পৌরসভাটির দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
নিবার্চনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে লড়াই হবে ত্রিমুখী। এখন চলছে প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা রাত-দিন এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জনসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক নিয়ে। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় তা নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোও নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। এ তিন প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। ফলে নির্বাচনে হারজিৎ নিয়ে এখনই সঠিক হিসাব মেলাতে পারছে না প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন- আওয়ামী লীগের জাফর আলী খান (নৌকা), বিএনপির মো. ওমর আলী (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুর রহমান (মোবাইল ফোন)।
নয় ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫ এবং তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে আলোচনায় ভোটাররা। প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন তারা। চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও হিসাব-নিকাশ।
এ আসনটি ধরে রাখতে চায় ক্ষমতামীল দল আওয়ামী লীগ। রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর বলেন, বাঘাইছড়িতে আওয়ামী লীগের প্রতি জনগনের সমর্থন আছে। যাকে দলীয় প্রার্থী দেয়া হয়েছে, তিনি স্থানীয় প্রবীণ রাজনীতিক, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতা। সুষ্ঠু ভোট হলে দলীয় প্রার্থীর জয় হবে।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমানে সমানে লড়ছে বিএনপিও। এ নির্বাচনে জয়লাভ করে বিগত সময়ের সকল জড়তা কাটিয়ে উঠতে চায় তারা।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হলে মেয়র পদে বিএনপির জয় নিশ্চিত হবে।
রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি বাঘাইছড়ি পৌরসভায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশা করছি।
এদিকে, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর অবস্থানে আছে স্থানীয় প্রশাসন।
বাঘাইছড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আছে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ দল। নির্বাচনে ঝুঁকি এড়াতে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তাবাহিনী প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সীমান্তবর্তী দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি। একটি পৌরসভাসহ আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গড়ে উঠেছে এ উপজেলা। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ১৭৭। নির্বাচনে নয়টি কেন্দ্রের ৩৩ বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিডি প্রতিদিন/৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা