বগুড়ার ধুনটে ঋণের দায়ে আত্মহুতি দেওয়া এক ব্যবসায়ীর লাশ ২০ ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন করেছেন স্বজনরা। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের নাংলু গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাংলু গ্রামের নবির উদ্দিনের ছেলে নায়েব আলী লাবু (৫৫) একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। নিঃসন্তান দম্পতির অভাব অনটনের সংসার। পৈত্রিক সূত্রে ১৫ শতক জমির মালিক তিনি। শেষ সম্বল ১৫ শতক জমি কৌশলে ৬ জনের কাছে বন্ধক রেখে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্ত ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় ৪ মাস আগে মুদি দোকান বন্ধ করে দেন।
এদিকে, ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য পাওনাদাররা নায়েব আলীর ওপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বিষপানে অসুস্থ হয়ে পড়েন নায়ের আলী। পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পাওনাদাররা সোমবার রাতে নায়েব আলীর বাড়িতে হাজির হয়ে ঋণের টাকার দাবিতে লাশ দাফনে বাধা দেন। সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নায়েব আলীর লাশ দাফনে সহযোগিতা করেন।
এদিকে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নায়েব আলীর বাড়ি থেকে পাওনাদাররা কৌশলে সটকে পড়েন।
নিহত নায়েব আলীর ছোট ভাই এমদাদুল হক বলেন, আমার ভাই ভবঘুরে স্বভাবের এবং সংসারের প্রতি খুবই উদাসীন ছিলেন। তাই ঋণ দেনা করে তাকে সংসার চালাতে হয়েছে। দিনে দিনে ঋণের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় বিষপানে আত্মহত্যা করেন। ঋণের টাকা চেয়ে পাওনাদাররা আমার ভাইয়ের লাশ দাফন করতে বাধা দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে ঋণের টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও লাশ দাফন করা সম্ভব হয়নি। অবশেষ পুলিশের সহযোগিতায় ভাইয়ের লাশ দাফন করা হয়েছে।
বগুড়ার ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল ইসলাম বলেন, ঋনের দায় এড়াতেই নায়েব আলী আত্মহত্যা করেছে। ঋণের টাকা পরিশোধের বিষয় নিয়ে নিহতের পরিবার ও গ্রামবাসির মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় লাশ দাফনে বিলম্ব হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২১ মার্চ ২০১৭/হিমেল