যেখানে খদ্দের, সেখানেই সেলুন নিয়ে চলে যান মধুচন্দ্র শীল। রোদ গায়ে লাগলে বদল করেন সেলুনের জায়গা। আকাশ তার সেলুনের ছাদ। গাছতলা তার সেলুনের এসি। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার চাচীতারা গ্রামের খুশী মোহন শীলের ছেলে মধু চন্দ্র শীল ধরে রেখেছেন বাপ দাদার পেশা। একটি পিড়ি আর ক্ষুর, ব্লেড, সেভিং লোশন, কাঁচি, চিরুণীই তার সেলুনের সরঞ্জাম।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাটুরিয়ার সাভার বাজারের এক কোনে পিড়িতে বসে নিজ মনে চুল কাটার কাজ করে যাচ্ছেন মধু শীল। কাজের ফাঁকে জানান, সকলেই এখন সেলুনে যায়, মাটিতে বসে কেউ কাজ করাতে চায় না। আমার তো সেলুন দেওয়ার মতো অর্থ নেই, তাই আমি বাপ-দাদার পেশাকে ধরে রেখেছি। অনেকে আমাকে সেলুনে কাজ করতে বলেন কিন্তু আমি কোন দোকানে কর্মচারী থাকব না। আমি কষ্ট করে চলবো, অন্যের গোলামি করবো না। আমি গরীব মানুষ আর গরীব মানুষের কাজ করে যাচ্ছি। এতে গরীবেরও উপকার হচ্ছে। যেখানে সেলুনে সেভ করতে পঞ্চাশ টাকা নেয়, আমি মাত্র দশ টাকা নেই। তিনি আরো জানান, তার কাজের অভাব নেই। তাকে যারা ভালবাসে তারা কাজের জন্য অপেক্ষা করেন । এই কাজ করে ছেলেকে কলেজে এবং মেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তিনি ভাল আছেন বলে গর্ব করেন। আত্মপ্রত্যয়ী মধু চন্দ্র আজো ধরে রেখেছেন পরিবারের ঐতিহ্য। নিজ মনে নরসুন্দরের কাজ করে যাচ্ছেন আপন মনে। নেই কোন আফসোস। আছে গর্ব। পরের প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সন্তানদের পড়ালেখা করাচ্ছেন।
তার মতে, গাছতলাই তার এসি সেলুন। তার খদ্দেরের কমতি নেই। প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে মনের আনন্দে চুল-দাঁড়ি কাটতে আসেন অনেকে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ