কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বন্ধুর পরামর্শে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে চালককে হত্যার ঘটনার দুই সপ্তাহ পর মূল ঘাতককে আটক করেছে থানা পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দেয় ঘাতক রিফাত। বৃহস্পতিবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ। থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুলাই মুন্সিরহাট ইউনিয়নের নাঙ্গলিয়া খালের লক্ষীপুর কালভার্টের নিচে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। লাশের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পৌর এলাকার পূর্ব চান্দিশকরা গ্রামের ভাড়াটিয়া খায়রুল ইসলাম লাশটি তার মেজো ছেলে তাফরুল ইসলাম সৈকতের বলে নিশ্চিত করে। তাদের বাড়ি রংপুর জেলার গঙ্গাছড়া থানার চর ইশ্বরকাল গ্রামে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম বুধবার রাতে কনকাপৈত ইউনিয়নের তারাশাইল গ্রাম থেকে ওই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ও পৌর এলাকায় ভিকটিমের পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোঃ রিফাতকে (২৮) আটক করেন। তার দেহ তল্লাশি করে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করেন। আসামিকে গ্রেফতার পরবর্তী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম তাফরুল ইসলাম সৈকতকে খুন করার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেন।
আদালতে জবানবন্দিতে আসামি রিফাত জানান, সে মিশুক চালক। ভিকটিমের পাশের বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করে। ভিকটিম আসামির ছোট ভাইয়ের মতো এবং সেও মিশুক চালায়। আসামি একটি মিশুক কিনেছিল ঋণ করে এবং কিস্তি পরিশোধ করা লাগে। এছাড়াও আসামির আরো ঋণ ছিল। আসামি তার কিস্তি এবং ঋণের বিষয় নিয়ে তার দুইজন বন্ধুর সাথে শেয়ার করে। আসামি তার বন্ধুদের সাথে মাঝে মধ্যে মাদক সেবন করতো এবং ভিকটিমও তাদের সাথে মাদক সেবন করতো। আসামি তার বন্ধুদের প্ররোচনায় মিশুক ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় তার পূর্ব পরিচিত ভিকটিম সৈকতকে নিয়ে গত ২ জুলাই রাতে ভিকটিমের মিশুক নিয়ে নাঙ্গলিয়া খাল এলাকায় গিয়ে বসে অনেক্ষণ গল্প করে। একপর্যায়ে আসামি ভিকটিমকে মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ভিকটিমের সাথে থাকা মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং মিশুকের চাবি নিয়ে মরদেহ কালভার্টের নিচে ফেলে দিয়ে মিশুক নিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
বিডি প্রতিদিন/এএ