ঝালকাঠির নলছিটি থানার ৩ এসআই বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার ঘটনা রেস কাটতে না কাটতেই ফের আরেকটি বিতর্ক সৃষ্টি করলেন জেলার রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজ। শনিবার থানার আওতাধীন ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট এলাকা থেকে ইয়াবা ও গাঁজাসহ এই পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে তার সাথে থাকা মোটর সাইকেলে রাজাপুর উপজেলার নারকেল বাড়িয়া গ্রামের আতিকুর রহমান বাবু নামে একজন আটক করে ঝালকাঠি সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে মোটর সাইকেলটি নলছিটি থানায় আটক রয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। রাতে এস আই সিরাজ ও বাবুকে ঝালকাঠি সদর সার্কেল অফিসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান তার কার্যলয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সদর থানা থেকে আতিকুর রহমান বাবুকে ছেড়ে দেয় সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ফিরোজ।
এর আগে, থানায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় আতিকুর রহমান বাবু থানা থেকে বেরিয়ে গেলে একটু পর উপ-পরিদর্শক মো. ফিরোজ তাকে না পেয়ে অধস্তনকে ধমক দেয়। পরে বাবুর স্বজনদের মাধ্যমে পুনরায় থানায় ডেকে এনে বাবু ও তার সাথে থাকা ভাইকে চড় থাপ্পড় মেরে ছেড়ে দেয় ফিরোজ। এ নিয়ে তার কাছে সাংবাদিকরা তথ্য জানতে চাইলে তিনি দিচ্ছি দিব বলে ভেলকিবাজি করে তথ্য না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পুরো বিষয়টি অতি গোপন রেখেছে শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভেতরে তোলপাড় চলছে।
বিশেষ করে এই ঘটনার পরপর জেলা শহরে কর্মরত সাংবাদিকদের মোবাইলফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ থেকে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অস্বস্তি। কিন্তু এই বিষয়ে তারা মুখ না খুললেও মিডিয়াকে চেপে যেতে বলছে। পুরো বিষয়টি নলছিটি ও ঝালাকাঠি পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তাছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল শনিবার দুপুরে সাদা পোশাকে পরিহিত এসআই সিরাজকে আটক করে ফেরিঘাট এলাকা থেকে। ওই সময় তার শরীরে তল্লাশি দিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া যায়। ওই সময় সিরাজ নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিলে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। এই খবর ঝালকাঠি পুলিশে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়। কারণ খুব শিগগিরই এই পুলিশ কর্মকর্তার নলছিটি থানায় যোগদানের কথা ছিল।
রাজাপুর থেকে সম্প্রতি তিনি নরসিংদী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে, এই পুলিশ কর্মকর্তা সিরাজ ষাটপাকিয়া থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ে নলছিটি থানার উদ্দেশেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু ফেরিঘাটে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে। তবে এই বিষয়ে জানতে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কেএম সুলতান মাহমুদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এর আগে গত মাসে নলছিটি থানার বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। মূলত ওই বিতর্কের মধ্যেই এবার আরেকটি বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় থানার ওসি রয়েছেন বিপাকে।’
সদর থানার ওসি তাজুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এর বাইরে কিছু বলতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এ ব্যপারে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রাকিব জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। আর এ ধরনের কোন খবর তিনি জানেন না।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ মে, ২০১৭/মাহবুব