বান্দরবানের লামায় ১৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নগদ টাকা গ্রহণ, ব্যাক্তিগত পছন্দের লোকজনকে অগ্রাধিকার, নীতিমালা অমান্য, মেধাবী ও বাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে চাকরি না দেয়ার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান পার্বত্য জেলা পরিষদ বান্দরবানের কাছে অভিযোগ করেছে একাধিক প্রার্থী।
জানা গেছে, মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা এর স্মারক নং প্রাশিঅ/সা:প্র/২৪-১৮/২০০৯/ ৩৮৯/৬৪(৫০৫) তারিখ ০৪/০৩/২০১৫ আলোকে লামা উপজেলায় ১৫ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গত ৮ জুন বৃহস্পতিবার উপজেলা দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ কমিটি ১৫টি বিদ্যালয়ের প্রার্থীদের চুড়ান্ত যাচাই বাচাই ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে প্যানেল প্রস্তুত করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেয়ারম্যান বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে প্রেরণ করে।
দরদরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রার্থী প্রভাত কুসুম বড়ুয়ার পিতা কাজল বড়ুয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরকারী নীতিমালা মানা হয়নি। নিয়োগ কমিটি ব্যাক্তিগত পছন্দের লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার প্রার্থীতে বাদ অন্য ইউনিয়নের প্রার্থীকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে চাকরি দেয়া হয়েছে।
রাজবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ১৩১ জন অভিভাবক চেয়ারম্যান পার্বত্য জেলা পরিষদ বান্দরবানের কাছে করা লিখিত অভিযোগে বলেন, দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ কমিটি নগদ টাকা লেনদেন করে চরিত্রহীন ও নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামিকে চাকরি দিয়েছে। যার কাছে আমাদের মেয়ে শিশুরা নিরাপদ নয়। এলাকাবাসি এই নিয়োগ বাতিলের আবেদন করেন।
ইয়াংছা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রার্থী অংথোয়াই গ্য মার্মা বলেন, আমি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছি। অথচ আমাকে চাকুরী না দিয়ে একটি পা নেই এমন অযোগ্য প্রার্থী উক্য ওয়াং মার্মাকে চাকরি দিয়েছে। যে কোন স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনা। আসলে যারা তাদের দাবি পূরণ করতে পেরেছে তাদের চাকরি হয়েছে। এছাড়া আকিরাম পাড়া, বাইশপাড়ি ও টিটিএন্ডডিসি বিদ্যালয়ে মেধায় ১ম স্থান অর্জন কারীকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ কমিটির সদস্য যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, আমরা নগদ টাকা কারো কাছ থেকে নেই নি। আর নিয়োগ চুড়ান্ত করেছে চেয়ারম্যান পার্বত্য জেলা পরিষদ বান্দরবান।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও নিয়োগ কমিটির সদস্য জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, কমিটির সদস্য ছিলাম, তবে মতামতের কোন মূল্য ছিল না। লোক হাসানো কমিটি করা হয়েছে। অনেক স্কুলে আমরা মেধাক্রমে যাকে প্রথম করেছিলাম তাদের চাকরি হয়নি। দোছড়ি মগপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম হওয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আব্দুল আলিমের চাকরি দেয়া হয় নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দপ্তরী নিয়োগ কমিটির সভাপতি খিন ওয়ান নু বলেন, আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়ে মেধাক্রমে ৩ জনের প্যানেল করে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে প্রেরণ করেছি। নিয়োগ দিয়েছে জেলা পরিষদ। এ বিষয়ে তারা ভালো বলতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার