মা ও মেয়ে একসঙ্গে এইচএসসি পাসের ঘটনা সচরাচর খুব একটা শোনা যায় না। কিন্তু এবার সেই ঘটনাই শোনা গেলো। মা ও মেয়ের একসঙ্গে পরীক্ষায় পাস করার এমন ঘটনায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে সেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ ও প্রতিবেশীরা। বলছিলাম জয়পুরহাটের আদর্শপাড়া মহল্লার চল্লিশোর্ধ বয়সী মা ইসমত আরা ও তার তার মেধাবী মেয়ে তানজিলা আফরিনের কথা।
রবিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর জানা যায়, এই মা ও মেয়ে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে কৃতিত্বের সঙ্গে এ-গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের এমন ফলাফল গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তাদের শিক্ষক, সহপাঠী ও বন্ধু-বান্ধবরা। তাদের সাফল্যে সবাই উচ্ছ্বসিত। আত্মীয় স্বজনদের কেউ কেউ নিয়ে আসেন ফুল ও মিষ্টি হাতে করে।
জেলা জজ আদালতের সাবেক পেশকার জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী ইসমত আরা ও তাদের এক মাত্র মেয়ে তানজিলা আফরিনকে নিয়ে জয়পুরহাট পৌর এলাকার আদর্শপাড়া মহল্লায় বসবাস করেন। ছোট এই পরিবারটি সবার কাছে আদর্শ পাড়ার একটি আদর্শ পরিবার হিসেবেই পরিচিত।
জানা যায়, এর আগে এই মা ও মেয়ে একই সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। আর সেই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দু’জনেই ভাল ভাবে উত্তীর্ণ হন। এসএসসিতে মেয়ে তানজিলা আফরিন পান জিপিএ-৫। মেয়ে ভর্তি হয় বাড়ির নিকটবর্তী জয়পুরহাট সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে আর তিনি ভর্তি হন পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা-জামালপুর গ্রামের টেকনিক্যাল কলেজে।
ইসমত আরা বলেন, কিছুটা লোক লজ্জার ভয়ে বোরকা পরে তিনি কলেজে যাতায়াত করতেন। যাতে করে তাকে কেউ চিনতে না পারে। এ নিয়ে কেউ কটুক্তি তিনি তাতে মোটেও বিচলিত হতেন না। নীরবে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন বলেই মেয়ের মতো নিজেও এইচএসসি পাশ করেছেন।
একই সাথে মা-মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষায় আরও ভালো ফলাফলের আশা করলেও হতাশ হননি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, আগামীতে স্ত্রী ও মেয়েকে লেখাপড়ায় এগিয়ে যেতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ জুলাই, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৪