সিলেটের গোয়াইনঘাটে চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা ইসবর আলীকে পাঠানো হয়েছে জেল হাজতে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে নির্যাতিত কিশোরের পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গেলো ২৯ অক্টোবর সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মানাউড়া পূর্বপাড়া গ্রামে চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় রাসেল নামের এক কিশোরকে। পরে তাকে তুলে দেয়া হয় পুলিশের হাতে। পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায় মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে।
তবে রাসেলকে নিরাপরাধ দাবি করে তার ভাই ফিরোজ মিয়া জানান, গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আজিজুর ও ইসবর আলীর লোকজন তার ভাইকে চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেধে মারধর করেছে। পরে তাকে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। আদালত থেকে মামলার নথি তোলার পর তারা জানতে পারেন পুলিশ রাসেলকে মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে।
রাসেল জানান, নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার রাতে তার মা বেবাই বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। নির্যাতন ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর সাথে যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে এলাকায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন, গোয়াইনঘাট থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, নির্যাতিত রাসেলের বিরুদ্ধে চুরি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ করছেন এলাকার কেউ কেউ। তবে তার রাসেলের মায়ের অভিযোগ, গ্রামের আজিজুরের মেয়ের সাথে রাসেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্ক মানতে না পারায় তার ছেলেকে চোর সাজিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক অপরাধীরা পার পাবে না বলে মন্তব্য করেন ওসি।
নির্যাতনের ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে গত সোমবার সালুটিকর ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সুশংকর পালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে। তিন দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দাখিল করার কথা। তবে প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত তদন্তের ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার