রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমাকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। এঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরে বনরূপায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে সাংবাদিক ছাত্রং চাকমাসহ ১৫জন আহত হয়।
সোমবার রাতে শহরের স্টেডিয়াম এলাকায় এঘটনা ঘটে। বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমানে আহতরা রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমার উপর হামলার ঘটনায় সন্তু লারমা সমর্থীত সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)কে দায়ী করেছে জেলা ছাত্রলীগ। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ফোরকান আহমেদ নাফিজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় রাঙামাটি মারি স্টেডিয়াম থেকে খেলা শেষে বাড়ি যাচ্ছিল ছাত্রলীগ নেতা সুপান চাকমা। এসময় ১০/১২জনের একটি উপজাতি সন্ত্রাসী গ্রুপ এসে সুপন চাকমাকে এলোপাতারি মারধর শুরু করে। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রর আঘাতে মারাত্মক আহত হন সুপন চাকমা। সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সুপন চাকমাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
এ ঘটনার খবর শহরের ছড়িয়ে পড়লে বেপক উত্তেজনা দেখা দেয় রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। প্রতিবাদে সংগঠনটির উদ্যোগে তাৎক্ষণিক রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী, কোর্ট বিল্ডিং ও বাসষ্টেন এলাকায় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে টায়ারে আগুন দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় শহরের অভ্যন্তরীণ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যারিকেট তুলতে চায়লে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাটিচার্জ করলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে রাঙামাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধরা রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী ভাংচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাকাগুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় এক সাংবাদিকসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পরে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বরসহ বেশ কয়েকজন নেতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে। তবে রাঙামাটি শহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি কতোয়ালী থানার কর্মকর্তা (ওসি) সৎজিত বড়ুয়া। তিনি বলেন, যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহলও জোরদার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ফোরকান আহমেদ নাফিজ অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কিছু নামধারী সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়নের চাকমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মত জখম করেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। সুপায়নের অপরাধ- কেন সে ছাত্রলীগ করে? কেন সে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ করে না? আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরের বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলা। কিন্তু পুলিশ বিনা কারণে লাটিচার্জ ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগের ১৫জন নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এ প্রতিবাদে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন