ঢাকা আবাহনী অনুশীলনের মাঠে নেমে গেছে আগেই। বসুন্ধরা কিংস নামবে শনিবার। ঘরোয়া ফুটবলে নতুন মৌসুমের দলবদল শেষ হবে ১৪ আগস্ট। তার আগে দুই দলের অনুশীলনে নামার কারণ হচ্ছে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলতে হবে। আগামী মাসে ঢাকা ও দোহায় দুটি দল লড়বে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলার কথা ছিল ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানের। অবাক হলেও সত্যি যে, এএফসি লাইসেন্স না থাকায় খেলা হচ্ছে না তাদের। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাবের সাংগঠনিক ভিত কতটা দুর্বল এতেই প্রমাণ মেলে। অথচ এএফসি কাপে তাদের সাফল্য স্মরণীয় হয়ে আছে। আগে তো এশিয়ান ক্লাব কাপ নামেই পরিচিত ছিল এএফসি কাপ। এশিয়ার শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে তাদের জয় ও ড্র করার রেকর্ড রয়েছে। ইরানের পিরুজি ক্লাবকে ঢাকার মাঠে হারায় মোহামেডান। মালয়েশিয়ায় কাতারের আল-সাদ ও উত্তর কোরিয়ার টোয়েন্টি-ফাইভ ক্লাবকেও হারায় তারা। আশি দশকের শেষের দিকে এশিয়ান ক্লাব কাপে মোহামেডানের সাফল্য দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল।
ভাবা যায়, সেই মোহামেডান পেশাদার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলতে পারছে না লাইসেন্স না থাকায়।
একটি ঐতিহ্যবাহী দলের অধঃপতন কতটা ভয়াবহ তাতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মোহামেডান না পারুক অন্যরা তো বসে থাকবে না। দেশের শীর্ষস্থানীয় অন্য দুই দল আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস ঠিকই চ্যালেঞ্জ লিগে চ্যালেঞ্জ জানাতে নামছে। তাদের সাংগঠনিক ভিত তো আর নড়বড়ে নয়। লাইসেন্সের ব্যাপারে তারা বরাবরই সতর্ক। আবাহনী খেলছে লিগ রানার্সআপ হিসেবে। আর কিংস সুযোগ পেয়েছে বিদেশি একটি দল নাম প্রত্যাহার করায়।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে আবাহনী প্রতিপক্ষ কিরগিজস্তানের মুরাস ইউনাইটেড। বসুন্ধরা কিংস খেলবে সিরিয়ার আল-কারামাহর বিপক্ষে। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে আবাহনীর ম্যাচ। অন্যদিকে সিরিয়ার যে পরিস্থিতি, সেখানে গিয়ে তো আর খেলা সম্ভব নয়। কিংস তাই এএফসির কাছে চিঠি দিয়েছিল ম্যাচটি বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় আয়োজনের। তবে এএফসি তা আয়োজন করছে নিরপেক্ষ ভেন্যু কাতারের দোহায়। আবাহনী তাদের অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছে। কিংস আগামীকাল বা শনিবারে নামছে। এমনটি জানা গেছে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে।
আবাহনী ও কিংসের এমন তৎপরতার মধ্যে মোহামেডানের নীরবে বসে থাকা ছাড়া কিছু করার নেই। শুধু তাই নয়, সাদাকালো শিবির নিষ্ক্রিয় থাকলেও আবাহনী ও কিংস নতুন মৌসুমে ঘর প্রায় গুছিয়ে নিয়েছে। প্রতিকূল অবস্থায় থেকেও ধানমন্ডি এলাকার দলটি সেরাদের নিয়েই দল গড়ছে। কিংস থেকে শেখ মোরসালিন, পুলিশের আল আমিনকে দলে ভিড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় চমক সুলেমান দিয়াবাতে। অর্থ সংকটের কারণে তাকে মোহামেডান রাখতে পারছে না। আবাহনী হবে তার নতুন ঠিকানা।
মোরসালিন চলে গেলেও কিংসের শক্তি আগের চেয়ে বাড়ছে। সাতজন জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছাড়াও আবাহনীর শাহরিয়ার ইমনের যোগ দেওয়ার কথা। অনেক যাচাইবাছাই করে নতুন বিদেশি আনছে। কোচেরও পরিবর্তন ঘটেছে। সব মিলিয়ে নতুন মৌসুমে কিংস থাকছে চেনা রূপেই।
চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের তেমন সাড়া নেই। দিয়াবাতের জায়গায় রহমতগঞ্জের বোয়াটেং। উজবেকিস্তানের মুজাফরর থাকছেন। দুই প্রবাসী খেলোয়াড়ও যোগ দেবেন শোনা যাচ্ছে। স্থানীয়দের মধ্যে সুমন রেজা ও ব্রাদার্সের রহমত মিয়া ছাড়া পরিচিত কেউ নেই। অন্যদিকে গতবারের খেলা তিন খেলোয়াড় নাকি নতুন ঠিকানা খুঁজছেন। চ্যাম্পিয়নরা সংকটে বন্দি বলাই যায়।