রাজশাহীতে ৩৮ কোটি টাকার বেশি খরচ করে দুটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হলেও তা চালু হয়নি। ৬ কোটি টাকা খরচ করে সদর হাসপাতাল সংস্কার করা হয়। আর ৩২ কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয় শিশু হাসপাতাল। সদর হাসপাতালটি চালু হয়নি জনবলের সংকটে। আর একই সংকটে নির্মাণকাজ শেষ হলেও ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেওয়া হয়নি শিশু হাসপাতাল। ফলে দুয়ারে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষ।
রাজশাহী মহানগরীর সিপাইপাড়ায় রাজশাহী সদর হাসপাতাল। একসময় হাসপাতালটি ছিল রাজশাহী ও আশপাশের জেলার রোগীদের অন্যতম ভরসার জায়গা। কিন্তু শত বছরের পুরোনো ভবনে হাসপাতালটি আর চলছিল না। দেড় যুগ ধরে বন্ধই পড়ে থাকে। কিন্তু ২০২১ সালে জেলায় অতিরিক্ত করোনা রোগীর চাপে বন্ধ হাসপাতালটি ফের চালুর কথা ভাবা হয়। ৬ কোটি টাকার বেশি খরচ করে হয় সংস্কারকাজ। সেই কাজ শেষ হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। তবু এক বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে হাসপাতালটি।
জনবলের অনুমোদন না হওয়ার কারণেই হাসপাতালটি এখনো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এটি চালু না হওয়ায় অতিরিক্ত রোগীর চাপ পড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। ১ হাজার ২০০ শয্যার রামেক হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রায় আড়াই হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছে। বহির্বিভাগেও সেবা নিচ্ছে প্রায় ৭ হাজার রোগী।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, ‘রাজশাহীর মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমিও চাই সদর হাসপাতাল চালু হোক। শুনেছি প্রয়োজনীয় জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন সিভিল সার্জন। সব ঠিক হলে হয়তো চালু করা হবে।’
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের উত্তর-পশ্চিম কোনে টিবি হাসপাতালের কাছে দুই বছর আগে ২০০ বেডের একটি শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও ঝকঝকে-তকতকে ওই ভবনটি এখনো তালাবদ্ধ। চার তলা বিশিষ্ট ২০০ বেডের শিশু হাসপাতাল নির্মাণে (কয়েকটি প্যাকেজ) ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা। তবে চিকিৎসক, নার্স ও সাপোর্টিং স্টাফ নিয়োগসহ মেডিকেল সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। আর এ কারণেই ভবন প্রস্তুত থাকলেও হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এসআইএম রাজিউল করিম বলেন, জনবলের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। জনবল পেলে হাসপাতালটি চালু করা হবে।