বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় আনতে হলে আমাদের একটা কার্যকর নির্বাচন লাগবে। সেই নির্বাচন আমরা আশা করছি আগামী বছরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে। তবে অতীতের মতো বস্তাপচা নির্বাচন আমরা চাই না। এমন নির্বাচন আমরা মেনেও নেব না। নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ। এই নির্বাচন হতে হবে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের উপরে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। কোন মাস্তানতন্ত্র চলবে না। এগুলো মেনেই আগামী বছরের প্রথম দিকে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশে জটিলতা সৃষ্টি হবে সেটা আমাদের জানা আছে। আমরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে মজবুত পিলারের উপর দেখতে চাই।
বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজারে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অফুরন্ত নিয়ামত ও সম্ভাবনার দেশ। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট জনসংখ্যার ৪২ ভাগের বেশির বয়স ৭০ এর উপরে। অথচ আমাদের জনসংখ্যার বড় অংশের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। এটি আমাদের একটা বড় নিয়ামত। আমাদের মাটির নিচে, সমুদ্রের নিচে প্রচুর সম্পদ। এত এত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও গত ৫৪ বছরে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারিনি।
এই ব্যর্থতার কারণ প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, আমাদের একটা বড় সম্পদ চরিত্র। সেই সম্পদের ঘাটতি ছিল। ক্ষমতায় যারা ছিলেন তারা কেবল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। জনগণের কথা ভাবার সময় তাদের ছিল না। সবাই দুদককে যতটা ভয় করে আল্লাহকে ততটা ভয় করলে কেউ দুর্নীতি করতো না। জনগণের সম্পদও পাচার করতো না। গত ১৫ বছরে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি ভালোবাসা থাকলে এত সম্পদ পাচার হতো না। আজ এই সম্পদ দেশে থাকলে দেশের চেহারাই বদলে যেত। ইউরোপ এবং চীন সফরের সময় বিদেশিরা বলেছে, আমাদের এক নম্বর সমস্যা দুর্নীতি। এই দুর্নীতি ঠেকাতে পারলে দেশ অবশ্যই বদলে যাবে।
তিনি বলেন, শুধু ঘুষ আর চাঁদাবাজিই দুর্নীতি নয়, বুদ্ধি দিয়ে জনগণকে ঠকানোটাও একটা বড় ধরনের দুর্নীতি। আর জনগণকে তারাই ঠকায় যারা দেশ থেকে পালিয়ে যায়। তারা দেশটাকে যৌতুক মনে করে। জামায়াত কখনোই দেশ থেকে পালায়নি। বরং জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও দেশে ফিরে আসার উদাহরণ আছে আমাদের নেতৃবৃন্দের।
জামায়াত আমির আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর জামায়াত হিংসা চরিতার্থ না করার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা নিজেরা মন্দিরসহ হিন্দুদের বাসাবাড়ি পাহারা দিয়েছি। কোনো ক্ষতি হতে দেয়নি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ফয়জুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবুল কাশেম ও পৌর আমির কাজী জমির হোসাইনের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবীবুর রহমান, মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম।
বিডি-প্রতিদিন/শআ