উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে ওমান উপসাগরে ইরানি বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি হলো একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। ইরানের দাবি, তেহরানের আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করায় তারা মার্কিন জাহাজটিকে সতর্ক করে প্রতিহত করেছে। বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ ইরানি সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ইউএসএস ফিটজজেরাল্ড নামের মার্কিন যুদ্ধজাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যায়, যখন সেটি ‘ইরানের তত্ত্বাবধানে থাকা জলসীমায়’ প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
ঘটনার সময় উভয় পক্ষ থেকেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন জাহাজটি পাল্টা হুমকি দিলেও ইরানি পাইলট বারবার সতর্ক করে বলেন, তারা যেন ইরানের জলসীমা থেকে সরে যায়। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধজাহাজটি পিছু হটে ও গতিপথ পরিবর্তন করে বলে দাবি করেছে ইরান।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মার্কিন নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ইরানি টেলিভিশন এক ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়— একটি হেলিকপ্টার থেকে একটি যুদ্ধজাহাজকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং পাইলট তাকে ‘পথ পরিবর্তন’ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও বাড়ছে। এর মাত্র এক মাস আগে, ২২ জুন, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনার পর দুই দেশের কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে গেছে।
ইরানি বাহিনী এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে এ ধরনের মুখোমুখি অবস্থানে গেছে। ২০২৩ সালে ইরান দাবি করেছিল, তারা একটি মার্কিন সাবমেরিনকে হরমুজ প্রণালির কাছে পানির ওপরে উঠতে বাধ্য করেছে। তবে ওয়াশিংটন সে সময় সে দাবি নাকচ করে দিয়েছিল।
ওমান উপসাগর ও পারস্য উপসাগরঘেঁষা জলসীমায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং কৌশলগত নিরাপত্তার কারণে এ ধরনের ঘটনার ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। ফলে এই সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জাহাজটির নাম ‘ডিডিজি ফিটজেরাল্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তথ্যমতে, জাহাজটিকে দক্ষিণ দিকে পথ পরিবর্তন করতে বলে ইরানি সেনাবাহিনী। তবে যুদ্ধজাহাজটি পথ পরিবর্তন করে কাদের জলসীমায় প্রবেশ করেছে তা স্পষ্ট হতে পারেনি রয়টার্স।
বিডি-প্রতিদিন/শআ