ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘মব’ সম্বোধন, গণহত্যার পক্ষে বয়ান দেওয়া এবং নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে ইংরেজি বিভাগের সামনে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তারকে স্বৈরাচারের সহযোগী আখ্যা দেন। শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; দালালদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দালালদের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘১ ২ ৩ ৪, নীলিমা বহিষ্কার’, ‘জুলাইয়ের অপমান সইবো নারে সইবো না’, ‘স্বৈরাচারের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এছাড়াও অধ্যাপক নীলিমাকে তিরস্কার করে বিভাগের দেয়ালে গ্রাফিতি লিখেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ড. নীলিমা আক্তার যিনি আওয়ামীপন্থী নীল দলের সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য, গত জুলাই মাস থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে আসছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো তিনি প্রতিনিয়ত শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতা বলে আখ্যায়িত করেন, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি। এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস বর্জন করলেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বিভাগ থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বরং তার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে।
তারা আরও বলেন, গত ২২ জুলাই ড. নীলিমা আক্তার তার একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে গত বছরের জুলাই থেকে আজ অবধি সব লাশের দায় ‘আন্দোলনকারীদের’ ওপর চাপিয়েছেন, যা অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তার নৈতিক অবস্থানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপিতে থাকা দাবিগুলো হলো– ড. নীলিমা আক্তারকে অবিলম্বে ও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, তার বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিডি-প্রতিদিন/শআ