নোয়াখালীর ৯ম শ্রেণির মাদ্রাসার ছাত্রী স্বপ্না আক্তারের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বুধবার দুপুরে সূবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চর আমিনুলহক গ্রামে নিহত স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। তারা অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত প্রেমিক মাকসুদকে গ্রেফতারের দাবি জানান। ঘটনার ৫ দিন পরে ও আসামি গ্রেফতার হয়নি। তবে ঘটনার পরে মাকসুদ ও তার পরিবার ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সূবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চর আমিনুলহক গ্রামে গাছের সাথে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় নবম শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী স্বপ্না আক্তারের (১৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার চর আমিনুল হক গ্রামের তেরিজপোল এলাকার হাবু মিয়ার বাড়ির বাগান থেকে ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ছাত্রী ওই বাড়ির আবদুস ছালামের মেয়ে এবং ওবায়দিয়া সুলতানিয়া দারুস সালাম মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
স্বপ্নার মা রাশেদা বেগম জানায়, তার মেয়ে স্বপ্না মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার সময় তাদের প্রতিবেশী নুর ইসলামের ছেলে মাকসুদুর রহমান (২২) স্বপ্নার সঙ্গে বিয়ের প্রলোভনে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে। গত এক বছর যাবৎ তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথাও হতো।
তিনি জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে খাবার খেয়ে স্বপ্না তার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে। রুমে ঢুকার পর মোবাইলে কথোপকথনের শব্দ শোনা যায়। পরে রাত ১টার দিকে স্বপ্না ঘরের দরজা খুলে বাহিরে যায়। এসময় মা রাশেদা বেগমের চোখে ঘুম চলে আসে।
পরে শনিবার ভোরে বাড়ি লোকজন বাড়ির আঙ্গিনায় স্বপ্নার মৃতদেহ একটি গাছের সাথে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে চরজব্বর থানার পুলিশকে খবর দেয়।
এদিকে, প্রেমিক মাকসুদুর রহমান মাদ্রাসা ছাত্রী স্বপ্নাকে মোবাইলের মাধ্যমে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে ধারণা করছেন স্বপ্নার পিতা আবদুস ছালাম, বোন আরজু আক্তার ও স্থানীয় হাবুলা, প্রবাসী হোসেন, জামাল উদ্দিন ঝর্ণ বেগম, রোকসানা সহ অনেকে।
এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর থেকে মাকসুদ ও তার পরিবার বাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছে এবং তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় মোড়লদের মাধ্যমে ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম জানান, খবর পেয়ে তিনি পুলিশের সাথে উপস্থিত থেকে লাশ উদ্ধারে সহযোগিতা করেন। স্বপ্না ও মাকসুদুর রহমানের প্রেম আলাপের বেশ কিছু মোবাইল রেকডিং সহ স্বপ্নার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পুলিশ জব্দ করেছে বলেও তিনি জানান।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন