কুমিল্লায় চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন হত্যার রহস্য বের হয়েছে। তিতাসে ১৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া মোস্তাক হত্যার বদলা নিতে গিয়ে গুলি করে খুন করা আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেনকে। মনির হোসেন খুনের ঘটনায় অংশ নেয় ভাড়াটে ৪ খুনী।
এদিকে এ ঘটনায় নবীর হোসেন ও বিলকিছ আক্তারকে গ্রেফতার করার পরই বেরিয়ে আসে মনির হত্যার রহস্য। মোস্তাক হোসেন খুনের বদলা নিতে তার স্ত্রী বিলকিছ আক্তারের পরিকল্পনায় মনির হোসেনকে খুন করা হয়। এ হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি নবীর হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বুধবার জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব চন্দ্র দেবনাথের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে বলে ডিবি পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ রাতে তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জগতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মনির হোসেনকে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন রোববার রাতে নিহতের ছেলে আইনজীবী মো. মুক্তার হোসেন নাঈম বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জগতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কাজী আশেক, নবীর হোসেনসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি গত সোমবার ডিবিতে হস্তান্তর হয়। ওই রাতে থানা ও ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারনামীয় আসামি ওই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল্লাহর ছেলে আসামি নবীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। আসামিদের গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেয়া ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ জানান, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের নিহত মোস্তাক হোসেনের স্ত্রী বিলকিছ আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার ডিবি কার্যালয়ে নবীর হোসেন ও বিলকিছ আক্তারকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা মনির হোসেন হত্যার পরিকল্পনা ও জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তদন্ত কর্মকর্তার নিকট জবানবন্দি দেয়।
আসামি নবীর হোসেনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি এ কে এম মনজুর আলম জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে আসামি নবীর হোসেনের ফুফা মোস্তাক হোসেন ঘাতকদের হাতে নিহত হন। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন মনির হোসেন। কিন্তু মনির হোসেনের প্রভাবের কারণে তারা ওই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাননি। ওই ক্ষোভে নবীর হোসেন ও তার ফুফা মোস্তাক হোসেনের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার মনির হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে দীর্ঘদিন থেকে সুযোগ খুঁজতে থাকে। ভাড়াটে খুনিদের মাধ্যমে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ কিলিং মিশনে অংশ নেয় ভাড়াটে ৪ খুনি। এসময় নবীর হোসেন ঘটনাস্থলের অদূরে ছিলেন এবং ঘটনার পর তিনি বাড়ি চলে যান। আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর বিকালে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, মনির হত্যাকাণ্ডে অপর পরিকল্পনাকারী গ্রেফতারকৃত বিলকিছ আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন