ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে বাদামের চাষ। চরাঞ্চলের পলিযুক্ত মাটিতে বাদামের ফলন ভালো হওয়ায় এবং কম খরচে বেশি লাভ থাকায় ক্রমেই বাড়ছে বাদামের আবাদ। চরাঞ্চলের বালিতে অন্য কোন ফসল না হওয়ায় কৃষকেরা বাদাম চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।
গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ফরিদপুর জেলার তিনটি উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক হারে বাদামের চাষ হয়েছে। বর্তমানে কৃষকেরা বাদাম তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর চরাঞ্চলের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। গত বছর বাদামের উৎপাদন হয়েছিল ১০ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
চরভদ্রাসন উপজেলার বাদাম চাষী আকবর শেখ জানান, পদ্মা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলগুলোতে বাদাম আর ভুট্টা ছাড়া অন্য ফসল তেমন একটা হয়না। আর বেশীর ভাগ সময় পানিতে তলিয়ে থাকার কারনে সেখানে ফসল লাগানোর তেমন সুযোগই নেই।
তবে বাদাম চাষের উপযোগী হচ্ছে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ বালুচরের জমিগুলো। অল্প সময়ের মধ্যে বাদামের ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া ভালো দামও পাওয়া যায়।
আরেক কৃষক নৈমুদ্দিন বেপারী জানান, বাদাম চাষে খরচ একেবারেই কম। আগে অনেকেই জমি পতিত রাখতো। কিন্তু এখন এসব পতিত জমিতে বাদামের আবাদ করছে।
এছাড়া বাদাম চাষী আফজাল মোল্লা জানান, বায়ান্ন শতকের একবিঘা জমিতে বাদাম আবাদে খরচ হয়েছে ৭/৮ হাজার টাকা। ফলণ ভালো হলে একবিঘা জমি থেকে বাদাম উৎপাদন হবে ১৫/১৬ মণ। যা বাজারে বিক্রি করলে পাওয়া যাবে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, সরকার বাদাম চাষের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষকদের মাঝে বাদাম চাষে প্রনোদনা দিয়ে আসছে। এ বছর জেলার সদর, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার ৬শ কৃষকের মাঝে উন্নত জাতের বীজ এবং সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। ফলে প্রতি বছরই বাদামের আবাদ বাড়ছে চরাঞ্চল গুলোতে।
বিডি প্রতিদিন/৬ এপ্রিল ২০১৮/ওয়াসিফ