একটু বাড়তি আয়ের আশায় সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ময়মনসিংহ শহরে বিল্ডিংয়ের কাজ শেষে শুক্রবার বাড়ি ফিরছিলেন আয়ূব আলী, পুত্র, ভগ্নিপতিসহ সহযোগীরা। বিকেলে হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ইমাম পরিবহনের সাথে সিএনজির সংঘর্ষে নিভে যায় ছয়টি তরতাজা প্রাণ।
নিহতরা তারা হলেন বীরগুছিনা গ্রামের আয়ূব আলী (৬০), ছেলে আব্দুল করিম (২৪), নাজিম উদ্দিন (৩০) ও নশ্বাইপাড়া গ্রামের মাজহারুল (১৫), নিহত আয়ূব আলীর ভগ্নিপতি সলিম উদ্দিন (২৫) এবং বাহিরশিমূল গ্রামের সিএনজি চালক নূরে আলম ওরফে সোনা মিয়া (৪৫)।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্ঘটনায় শোকে পরিণত হয়েছে নশ্বাইপাড়া ও ধোপাগুছিনা গ্রামে। নিহতের গ্রামের রাস্তা দিয়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। সবাই নিহতদের মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে যাচ্ছেন। মরদেহগুলো গ্রামে পৌঁছার পর হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজন ও এলাকাবাসীর আহাজারীতে ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ। যারা মৃতদেহ দেখতে যাচ্ছেন তারাও ধরে রাখতে পারছেন না নিজেদের চোখের পানি।
স্বামী আয়ূব আলী আর বুকের ধন ছেলে আব্দুল করিমকে হারিয়ে স্ত্রী কর্ফুলি আর তিন মেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তাদেরকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন গ্রামবাসীও। অন্যদিকে অকালে চলে যাওয়া মাজহারুলের বাবা সিদ্দিকুর রহমান অনেকটাই বাকরুদ্ধ। শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়েছিলেন বাড়িতে আসা মানুষের মুখের দিকে। নিহতের পরিবারগুলোর আহাজারী কিভাবে থামবে তা জানে না কেউ। তাদের অকাল মৃত্যুতে অসহায় পরিবারগুলোর ভবিষ্যত চিন্তার ভাঁজ নিহত স্বজনদের চোখে মুখে।
স্থানীয়রা জানান, নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছে তারা সবাই শ্রমের উপর নির্ভরশীল। রাজমিস্ত্রির কাজই তাদের প্রধান যোগান। আমরা খুবই মর্মাহত ও শোকাহত, ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। এমন মৃত্যুতে অসহায় পরিবারগুলোকে কোন সান্তনা দিতে পারছি না।
আজ বেলা ১১ টার দিকে জানাজায় ও নিহতদের বাড়িতে স্বজনদের শান্ত¦না দিতে যান হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ ও আমতৈল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমানসহ অনেকে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/১২ মে ২০১৮/হিমেল