টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে অপহরণের পর দফায়-দফায় ধর্ষণ ও শারিরীক নির্যাতনে নিহত গৃহবধূ কাকলি বেগমের (২৩) লাশ ৩ মাস ৪ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সিদ্দিকার নেত্বত্বে উপজেলার বানিয়াজান ইউানয়নের চুনিয়া পটল গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে কাকলীর লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যসহ শতশত এলাকাবাসী, সাংবাদিক, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নিজেরা করি ও ভূমিহীন সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার চুনিয়া পটল গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে কাকলি বেগমের পার্শ্ববর্তী বলদিআটা গ্রামের শাহজান আলীর ছেলে লিটন মিয়ার সাথে ২০১৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী বাড়ির ছাহের আলীর ছেলে রেজাউল হক (৩০) মাঝে মধ্যেই কাকলি বেগমকে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। এতে রাজি না হলে রেজাউল ক্ষিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে গত ১৩ জানুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় কাকলি বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি যাওয়া পথে গৈরাং নামকস্থানে আরো ৭/৮ জন দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর অজ্ঞাতস্থানে রেখে তাকে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে দফায়-দফায় ধর্ষণ করতে থাকে। এভাবে দীর্ঘদিন পৈশাচিক, শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে কাকলি বেগম নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃত ভেবে গত ৪ এপ্রিল বুধবার রাতে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে তার বাড়ীর পাশে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
এ ঘটনার পরপরই ধনবাড়ী থানায় মামলা করতে গেলে প্রভাবশালী রেজাউল গংদের চাপে রহস্যজনক কারণে মামলা নেননি। ফলে বাধ্য হয়ে নিহতের মা হেলেনা বেগম টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনালে মামলা করেছেন। মামলা নং- ১৫৯/২০১৮।
এদিকে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি মেম্বার শাজহান ওরফে কহিনুরের নেতৃত্বে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকায় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। মামলার বাদী হেলেনা বেগমকে মামলা প্রত্যাহরের হুমকী দেয়া হয়। মামলা না তোলা হলে তাকেও তার মেয়ের মতো অবস্থা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল