পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেছেন, বান্দরবানকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে এবং আমি বেঁচে থাকি তাহলে জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে সরকারি কলেজ করা হবে।
আলী কদম সরকারি কলেজ স্থাপনের সকল প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ। শিগগিরই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এই জেলার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশে আমি সব সময় থাকব। শূন্য হাতে শুরু করে আজ মাতামুহুরী কলেজ সব দিক থেকে পরিপূর্ণ। কলেজের উন্নয়নে আরও একাডেমিক ভবন, মিনি স্টেডিয়াম, হোস্টেল করা হবে।
শনিবার লামার 'সরকারি মাতামুহুরী কলেজ' জাতীয়করণে বিশেষ অবদানের জন্য কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা গ্রহণ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বীর বাহাদুর বলেন, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব রেজিস্টার্ড, এমপিওভুক্ত এবং আবেদিত ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। তারপর ইউএনডিপি কর্তৃক সৃষ্ট তিন পার্বত্য জেলায় আরও ২৩৮টি বিদ্যালয়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি করেছেন। ৩ হাজার মেগওয়াড বিদ্যুৎ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ১৮ হাজার মেগওয়াড। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয়ের পর এখন আমরা আকাশ বিজয় করেছি। পৃথিবীর উন্নয়শীল দেশের কাছে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু এক সূত্রে গাঁথা। ১৯২০ সালে ১৭ মার্চে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে আমরা কখনো এই সোনার বাংলাদেশ পেতাম না। উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। উন্নয়ন কার্যক্রম গতিশীল করতে তিনি সকলের কাছে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট চান।
সরকারি মাতামুহুরী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। কলেজের সিনিয়র প্রভাষক বাবু অংথিং এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, লামা-আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল বরণ দাশ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ ইসমাইল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল আজিজ, লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী, বান্দরবান জেলা পষিদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, মোস্তফা জামাল ফাতেমা পারুল, লামা থানা অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মাতামুহুরী কলেজের শহীদ মিনার উদ্বোধন, ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছাত্রবাসের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও কলেজ অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের কাজের ভিত্তি প্রস্তর করেন।
এছাড়া সম্প্রতি মাতামুহুরী কলেজে ১০টি প্রকল্পের বিপরীতে বাস্তবায়িত ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। দুপুরে কলেজের সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের জন্য মধ্যহ্ন ভোজের আয়োজন করে। শেষে প্রতিমন্ত্রীর সৌজন্যে কলেজ শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়।
বিকেলে প্রতিমন্ত্রী লামা পৌরসভা কার্যলয়ে লামা বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত লামা বাজার সমিতি অফিস ও ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল বিশিষ্ট লামা বাজার পাবলিক টয়লেটের চাবি হস্তান্তর করেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম