এক কিশোরের মৃত্যুর গুজবে নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামে বেদে পল্লীতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এ সময় বেদেদের অনেকগুলো বাড়িঘরে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। প্রাণভয়ে বেদেরা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও জেলাপ্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় এমপি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ আর্থ সহায়তা দেন এবং সার্বিক সহায়তা করার আশ্বাস দেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত শুক্রবার বেদে পল্লীর এক কিশোরী স্থানীয় একটি দোকানে আইসক্রিম কিনতে গেলে দোকানী তাকে অশালীন মন্তব্য করে। এনিয়ে বেদেদের সাথে দোকানী ও স্থানীয় লোকজনের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় তারেক আজিজ (১৭) নামে এক কিশোর দোকানের গরম তেলের কড়াইয়ে পড়ে ঝলসে যায়। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সোমবার দুপুরের দিকে এলাকায় তারেকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজন ও এলাকাবাসী বেদে পল্লীতে হামলা চালায়। দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে এই তান্ডব।
বেদে সর্দার মো: ওয়াসিম অভিযোগ করেন, গত ছয় বছর থেকে শতাধিক বেদে পরিবার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামে নিজস্ব ভূমিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। বখাটেরা প্রায়ই তাদের কিশোরীদেরকে উত্যক্ত করে আসছে। সোমবারের ঘটনায় তাদের ৩২টি টিনের ঘর, ১০টি তাবু ও ২৫টি খুপরি ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এছাড়া ১১টি ঘর ও ১১০টি সাপ পুড়ে যায়। হামলায় আহত হয়েছে ৬ বেদে। ঘটনার পর থেকে শরীফ ও সুমন নামে ২ শিশুর সন্ধান মিলছে না।
সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ৭০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বড় ধরণের সংঘাত এড়াতে এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
বিকেলে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক অনুদান ও আহতদেরকে চিকিৎসার আশ্বাস দেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান