উন্নয়ন প্রকল্পের ৬ কোটি টাকা বণ্টন নিয়ে সদস্যদের সাথে চেয়ারম্যানের বিরোধের জের ধরে বগুড়া জেলা পরিষদের হিসাব শাখা ও হেল্প ডেস্ক কক্ষে তালা ঝুলিয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্যরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় অসম বণ্টনের অভিযোগ এনে দুটি কক্ষে তালা দেয়ার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ দিয়ে করিডোরে অনশন করেছেন কর্মচারীরা।
বগুড়া জেলা পরিষদের প্রকৌশল শাখার উচ্চমান সহকারি শফিকুল ইসলাম বাদশা জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে চার টার দিকে জেলা পরিষদ সদস্যরা অফিসের কর্মচারীদেরকে বের করে দিয়ে হিসাব শাখা এবং হেল্প ডেস্ক কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। মঙ্গলবার কর্মচারীরা অফিসে এসে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি কর্মচারীদেরকে করিডোরে বসে থাকতে বলেন। এরপর অন্যান্য শাখার কর্মচারীরা কাজ কর্ম বন্ধ করে দিয়ে একত্রিত হয়ে করিডোরে অনশন শুরু করে।
বগুড়া জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ খান রনি জানান, জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সদস্যদের সাথে আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করছেন। চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে গরীর দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন বিতরণ করা যাচ্ছে না। গত তিন অর্থ বছরের এক হাজারের বেশী গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান টাকাও বিতরণ করা যায়নি। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নীতিমালা অনুযায়ী বিতরণ করার জন্য সকল সদস্যরা চেয়ারম্যানকে তাগিদ দিলেও তিনি সদস্যদের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে তার মত করে কাজ করছেন। একারণেই অফিসে তালা ঝুলানো হয়েছে। দাবী না মানা পর্যন্ত এই তালা লাগানো থাকবে। জনসংখ্যা মোতাবেক উন্নয়নের টাকা বণ্টন করছেন না। আমারা এই কথাটি চেয়ারম্যানকে বারবার বলেছি। তারপরও তিনি কোন কর্ণপাত করছেন না।
বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন জানান, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে এডিবির বরাদ্দকৃত ৬ কোটি টাকা তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। সদস্যদেরকে ২ কোটি, এমপিদের নামে ২ কোটি এবং চেয়ারম্যানের ২ কোটি টাকা। কিন্তু সদস্যরা তা মানতে নারাজ। তবে নীতিমালার বাহিরে কোন কাজ করা হয়নি।
বগুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচিত সকল সদস্যরাই বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। নির্বাচিত হওয়ার পর বগুড়া জেলা পরিষদে প্রথমবারের মত উন্নয়ন খাতের জন্য এডিপির বরাদ্দ টাকা নিয়ে এই তালা লাগানোর ঘটনা ঘটলো।
বিডি-প্রতিদিন/৩০ অক্টোবর, ২০১৮/মাহবুব