মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার মনোনয়নপত্র জমাদানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। এসময় দুই পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের ২০ জন গুরুত্বর আহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে টঙ্গীবাড়ী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে আটক করে।
সরেজমিনে জানা যায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রিপন মল্লিকের সাথে পূর্ব থেকে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার দুপুর ১২ টায় মিজান সিনহা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে টঙ্গীবাড়ী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যায়। এ খবর পেয়ে টঙ্গীবাড়ী বাজারে অবস্থান নেয় কয়েক শতাধিক রিপন মল্লিক সমর্থক। পরে মিজান সিনহার সাথে আসা গাড়ি লক্ষ্য করে লাঠি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। এসময় ল্যান্ড ক্রোসার মডেলের একটি গাড়ির ভাংচুর হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের দুই সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিনহা সমর্থকরা লাঠিসোঠা নিয়ে ধাওয়া করে মল্লিকের সমর্থকরা। সিনহার সমর্থকরা রুখে দাঁড়ালে দুই পক্ষে শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ। এসময় মল্লিকের সমর্থকরা এক পর্যায়ে সিনহার গাড়ি লক্ষ্য করে লাঠি ও ইটপাটকেল ছুড়ে। তার ল্যান্ড ক্রোজার মডেলের গাড়িটি ভাংচুর করা হয়। পরে চালক গাড়িটি উপজেলা কমপ্লেক্সে ঢুকিয়ে দেন। এর পরেও দুই গ্রুপের মধ্যে চলতে থাকে একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ।
সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ১২ টি ককটেল বিস্ফোরণ ও বন্দুকের গুলির আওয়াজ পাওয়া যায় বেশ কয়েকবার। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তার মোল্লা ও যুবদল নেতাসহ ১৫ জনকে আটক করে। আটক অন্যরা হলেন, শাহাদাত, আমির হোসেন, সানি, বিপ্লব, আলামিন, জনি, এরশাদ, মিজানুর , শহীদ। সে সময় তাদের কাছ থেকে দুটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।
সংঘর্ষের মধ্যেই উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হাছিনা আক্তারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা। এসময় মিজানুর রহমান সিনহা বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসলে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালাই একপক্ষ। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে বিএনপি নেতা রিপন মল্লিক বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুনলাম মিজান সিনহার সমর্থক দেলোয়ার হোসেন দেলু আমার এক কর্মীকে বকাঝকা করলে আমার সমর্থকরা প্রতিবাদ করে। এসময় আমার লোকদের ওপর হামলা চালায় তারা।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
