সাভারের বিরুলিয়ায় গায়ে আগুন লাগিয়ে নওশাদ হাসান হিমু (২৭) নামে এক তরুণ আত্মহত্যা করেছেন। সাভারের রানা প্লাজা ধসে দুর্ঘটনার পর অক্লান্ত উদ্ধার তৎপরতার জন্য তিনি সবার পরিচিত ছিলেন।
বুধবার রাত ১০ টার দিকে বিরুলিয়ার শ্যামপুর এলাকায় আবদুল হক মোল্লার বাড়িতে ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন হিমু।
তিনি বরিশালের উজিরপুর থানার বাবর গ্রামের সরদার আবুল হোসেনের ছেলে। বন্ধু-শুভানুধ্যায়ীদের কাছে পরিচিত ছিলেন ‘হিমালয় হিমু’ নামে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফ এম সাইদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। নিজের গায়ে নিজে কিরোসিন তেল ঢেলে পুড়ে মারা যায় সে। সে ৩ বছর ধরে এখানে বসবাস করতেন। আমরা যতটুকু জেনেছি হিমু কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। এছাড়া তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গেও থাকতেন না। আমরা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে কিভাবে তার মৃত্যু হলো তা আমরা ময়নাতদন্তের পর জানতে পারব।
সাভার মডেল থানার এসআই আজগর আলী বলেন, নওশাদ হাসান হিমুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হিমুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘হিমালয় হিমু’তে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার রাতে আত্মহননের আগে তিনি ফেসবুকে কয়েকটি পোস্ট দেন। এর মধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দেওয়া একটি পোস্ট ছিল, ‘ছোটকাল থেকেই আগুন আমার অনেক পছন্দ’।
তার মৃত্যুর খবরে অ্যাক্টিভিস্ট কল্লোল মোস্তফা ফেসবুকে লেখেন, ‘কিভাবে সম্ভব! কেন এরকম করল হিমু? রানা প্লাজার উদ্ধার তৎপরতায় যে মানুষগুলোকে সত্যিকারের হিরো মনে হয়েছিল, হিমু ছিল তার মধ্যে অগ্রগামী। এত সিরিয়াস ও ডেডিকেটেড ছিল! ধ্বংসস্তূপের যে গভীরতায় কেউ ঢুকতে সাহস করতো না, হিমু অবলীলায় সেখানে চলে যেত আহত-নিহত মানুষদের উদ্ধার করতে। হি ওয়াজ রিয়েলি মাই হিরো। ...ভীষণ কষ্ট লাগছে হিমুর মতো প্রাণবন্ত একটা ছেলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করছে শুনে। খুব খারাপ লাগছে।’
এদিকে শফিউদ্দিন মোল্লা নামে হিমুর পাশের বাড়িওয়ালা জানান, এক মেয়ের সঙ্গে হিমুর সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক বাবা-মা মেনে না নেওয়ায় তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন। আমাদের ধারণা করছি ওই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন