ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক (প্রস্তাবিত কমিটি) আল আমিন মোল্লাকে গরু চুরির মামলায় আসামি করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
গরুর মালিক কোনও মামলা না করলেও পুলিশ উৎসাহ নিয়ে নিজেরাই বাদী হয়ে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই এ মামলা করেছে বলে আল আমিনের পরিবারের দাবি।
এদিকে আল আমিনের মা রহিমা বেগম থানায় খোঁজ নিতে গেলে তাকে ‘চোরের মা’সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গরু চুরির মামলায় শুধুমাত্র ছাত্রদল নেতাকেই আসামি করা হয়নি, আসামি করা হয়েছে আল আমিনের ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ শেখসহ আরও দুইজনকে।।
জানা গেছে, গত ২৫ মে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার বাতুয়াডাঙ্গী গ্রাম থেকে দুটি গরু চুরি হয়। সেই চোরাই গরু পরদিন বোয়ালমারী থানা পুলিশের এসআই দ্বীপঙ্কর স্যানাল বোয়ালমারীর সোতাশী এলাকা থেকে উদ্ধার করে। গরু দুটি উদ্ধারের পর পুলিশের এসআই দ্বীপঙ্কর স্যানাল নিজে বাদী হয়ে বোয়ালমারী পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন মোল্লা, তার ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ শেখ, দুই ভাই কলেজ ছাত্র শাহীন মোল্লা ও কসমেটিকস ব্যবসায়ী আলী রেজা মোল্লার নামে মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে আবদুল্লাহ শেখকে কথা আছে বলে থানায় ডেকে এনে পুলিশ গরু চুরির মামলার আসামি দেখিয়ে আটক করে।
মামলার বিষয়ে খোঁজ নিতে আল আমিনের মা রহিমা বেগম থানায় গেলে তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়।
রহিমা বেগম জানান, ইফতারির পর থানায় গেলে এসআই দ্বীপঙ্কর স্যানাল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থানা থেকে বের করে দেন।
ছাত্রদল নেতা আল আমিন মোল্লা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন। রাজনীতির পাশাপাশি বোয়ালমারী বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, রাজনীতির কারণে বিভিন্ন সময় এসআই দ্বীপঙ্কর তাকে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা চায়। আমি টাকা না দিলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত থাকে। এরই জের হিসাবে সে আমাকে গরু চুরির মতো একটি মামলায় আসামি বানিয়েছে। শুধু আমাকে নয়, আমার ভগ্নিপতিকেও মামলার আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে আমার প্রতিবেশী কলেজ ছাত্র শাহীন মোল্লা ওরফে হৃদয় ও তার বড় ভাই বোয়ালমারী বাজারের ব্যবসায়ী আলী রেজা মোল্লাকেও আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, ছাত্রদল নেতাকে গরু চুরির মামলার আসামি করায় চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেছে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাদের দাবি, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্যই গরু চুরির মতো মামলায় আল আমিনকে আসামি করা হয়েছে। তারা এ ধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তদন্তের মাধ্যমে জড়িত পুলিশের শাস্তি দাবী করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার এসআই দ্বীপঙ্কর স্যানাল জানান, নেতা দেখে মামলায় আসামি করা হয়নি। গরু চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণেই এ মামলা হয়েছে।
আল আমিনের মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা’-এ প্রবাদ বাক্যটিই বলে দেয় আল আমিনের মা মিথ্যা ও আষাঢ়ের গল্প ফেঁদে সুবিধা নেবার চেষ্টা করছেন।
বিডি প্রতিদিন/কালাম