ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। সুস্বাদু এই তরমুজ চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার উপদইল গ্রামের গোলাম রব্বানী রুবেল, শহীদুল্লাহ ও রেঞ্জু সরকার এবার প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে ব্লাক বক্স ও সাগর কিং জাতের তরমুজের আবাদ করেছেন। ২ একর ৫০ শতক জমি জুড়ে ঝুলছে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের তরমুজগুলো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গ্রীষ্মকালীন এই তরমুজের ফলন হয়েছে ভালো। তাই ক্ষেতজুড়ে শুধু তরমুজ আর তরমুজ শোভা পাচ্ছে।
নতুন এই পদ্ধতিতে তরমুজের ফলন ভাল দেখে বিভিন্ন স্থান থেকে চাষিরা আসছে দেখতে। অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
পীরগঞ্জ উপজেলার আরেক তরমুজ চাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরাও আগাম তরমুজের চাষ করি কিন্তু মাচা পদ্ধতিতে কখনো আবাদ করা হয়নি। তাই দেখতে এসেছি। তিনি পুরো জমি ঘুরে দেখে বলেন, এ পদ্ধতিতে খরচ একটু বেশি হলেও ফলে পচন ধরে কম, বেশি ফলন হয় ও রোগবালাই কম হয়।
তার মতোই আরেক চাষি হরি সাহা বলেন, তিনি মাটিতেই তরমুজের আবাদ করেন। তাই আগ্রহ করে দেখতে এসে তিনিও আগামীতে এ পদ্ধতিতে তরমুজের চাষ করবেন বলে জানান।
এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে চাষিদের যা খরচ হয়েছে, তার দ্বিগুন লাভবান হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই রসালো ফল তুলতে শুরু করেছে চাষিরা। বাজারে চাহিদা থাকায় বাণিজ্যে লাভের অংক ভালো বলে জানায় চাষিরা। তারা জানায়, এবার ২ একর ৫০ শতক জমিতে তরমুজের আবাদ করতে খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১২ লাখ টাকা।
তরমুজ চাষি গোলাম রব্বানী রুবেল, ওই কৃষকরা শুধুমাত্র মৌসুমের সময় তরমুজ চাষ করতেন। কিন্তু এই প্রথম ৫ বিঘা জমিতে অসময়ে তরমুজ চাষ করেছেন। এতে খরচ হয় ৪ লাখ টাকা। তবে দুই মাসের মাথায় ৪ বিঘা জমির তরমুজ ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এখনো ১ বিঘা জমির তরমুজ অবিক্রীত রয়েছে। যা আরও ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই কৃষকরা বলেন, ‘ব্লাক বক্স ও সাগর কিং তরমুজ চাষ করে অল্প সময়ে আমরা অনেক লাভবান হয়েছি। আমাদের দেখে আশপাশের অন্য কৃষকরাও ওই তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।’
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ গোলাম সারোয়ার বলেন, এবার জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজের আবাদ হয়েছে, এর মধ্যে মাচা পদ্ধিতিতে আবাদ হয়েছে ২ একর ৫০ শতক জমিতে।
এবার এ উপজেলা থেকে উৎপাদন হবে ৭শ' মে. টন তরমুজ। তরমুজ লাভজনক ফসল তাই আগামীতে এর আবাদ আরো বৃদ্ধিপাবে বলে জানায় কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন করে চাষিরা পাবে ন্যায্য দাম এরই লক্ষে স্থানীয় কৃষি দপ্তর চাষিদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহাযোগিতার দিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল