সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী শুদ্ধি অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, প্রতিটি জেলায় এ শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হওয়া দরকার। দুর্নীতির লাগাম টানতে হলে জেলাভিত্তিক শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা অত্যন্ত জরুরি।
গতকাল সোমবার বিকালে সদর উপজেলার চৌদ্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হওয়া ও চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন এবং রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
পীর মিসবাহ বলেন, এ অভিযান তাদের জন্যে, যারা জনগণের সম্পদ আর সরকারি টাকা আত্মাসাৎ করে রাতারাতি গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন, যারা দলের পদ-পদবী কাজে লাগিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন, যারা মানুষের মাথায় কাঠাঁল ভেঙে অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাদেরকে এই শুদ্ধি অভিযানের আওতায় আনা হবে। আমরা দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, জঙ্গী ও মাদকের বিরুদ্ধে। এদের কালো হাত ভেঙে দেয়ার সময় এসেছে।
চৌদ্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসকর আলীর সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু শহীদের সঞ্চালনায় পীর মিসবাহ বিদ্যালয় এমপিভুক্তির ব্যাপারে বলেন, আমি ২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর বিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় বলেছিলাম আমার নির্বাচনী এলাকায় একটি বিদ্যালয়ও যদি এমপিওভুক্তির আওতায় আসে সেটা হবে চৌদ্দ গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়। আমি আমার কথা রেখেছি। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশেষ ডিও লেটার পাঠিয়ে উপজেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে এই বিদ্যালয়কে আমি এমপিওভুক্ত করেছি। সময়ের পরিক্রমায় বিদ্যালয়টি কলেজ শাখাও করা হবে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা মরহুম আবুল কালামকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তিনি।
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে পীর মিসবাহ বলেন, গত ৬ বছরে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অতীতে কখনও হয়নি। অসংখ্য রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যুতের আলোয় প্রায় প্রতিটি গ্রাম আজ আলোকিত। শিক্ষার অবকাঠামোগত খাতে কয়েকশ’ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ১০টি বিদ্যালয়ের বহুতল ভবন হয়েছে। আরো বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদন হয়েছে। অসংখ্য ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে যা অতীতে কেউ কল্পনাও করেননি।
মিসবাহ বলেন, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর জন্যে দোয়া করেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সদর-বিশ্বম্ভরপুর এই মহাসড়কে যাত্রী। সদর উপজেলার বিদ্যুৎ সম্পর্কে বলেন, ইতোমধ্যে সদর-বিশ্বম্ভরপুর আসনের ৯০ ভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সদর উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িতের আওতায় আনা হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমীন নাহার রুমা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অশোক রঞ্জন পুরকায়স্থ, রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল হক, জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি রশিদ আহমদ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মনির উদ্দিন মনির, রঙ্গারচর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু সাইদ, শিক্ষানুরাগী সদস্য মমিনুল ইসলাম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজু, রঙ্গারচর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ফয়জুর রহমান প্রমুখ। সংবর্ধান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চৌদ্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলতানা আক্তার। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আব্দুল্লাহ তাহমিদ সাইদ। এর আগে, রঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন সাংসদ পীর মিসবাহ।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক