ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার দুই কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে হত্যা বলে দাবি করছে পরিবার। বুধবার বিকেলে কসবার কুটি পোষ্ট অফিসের পেছনের সিঁড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সোনিয়া (১৩) ও সুমাইয়া (১৪) নামের ওই দুই কিশোরীর লাশ। তারা দুজনে ঘনিষ্ট বান্ধবী। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। দুই কিশোরীর একই সাথে এরকম মৃত্যুর ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। কেন তারা আত্মহত্যা করতে গেল তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
নিহত সোনিয়ার মা মিনু বেগম বলেন, আমার মেয়ের লাশ যারা দেখেছে কেউ বলবে না সে নিজে ফাঁসিতে ঝুলে মরেছে। পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ফাঁস লাগানো হয়েছে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। নিহত সুমাইয়ার বাবা বাবুল মিয়া বলেন, পার্শ্ববর্তী জেলায় আমি জীবিকার তাগিদে অবস্থান করি। আমার পরিবার-পরিজন কুটি এলাকায় থাকে। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কুমিল্লা থেকে ছুটে আসি। ঘটনা শুনে বুঝলাম আমার মেয়েকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেয়ে হত্যার বিচার চাই। এই হত্যার পেছনে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এসে ফাঁসি দেয়া হোক।
কুটি পোষ্ট অফিসের মাস্টার আব্দুল হাই বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে অফিসে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বিকেলে বৃষ্টির পর অফিসের পিছনে জাম গাছের নিচে কয়েকজন ছেলে জাম কুড়াতে গিয়ে চিৎকার দিয়ে পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আমি কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখি দুই কিশোরীর লাশ লোহার সিঁড়িতে ঝুলে আছে। তারপর স্থানীয় লোকজনকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। যে ভাবে লাশ দুটি ঝুলে ছিল মনে হচ্ছে কেউ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। নিহত দুই কিশোরীর বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। কোন ভাবে তাদের এ করুণ পরিণতি মেনে নিতে পারছে না পরিবারের লোকজন।
কুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান স্বপন প্রেম জনিত ঘটনার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, গত কয়েকদিন আগে মেয়েগুলোকে ছেলের সাথে কথা বলতে দেখে মেয়েগুলোর বাবা-মা তাদেরকে শাসায়। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে এর রহস্য উদঘাটন করতে হবে। যারাই জড়িত থাকবে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় দু’টি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল