ছাতার ব্যবহার এক দিনেই হয়ে উঠেনি। মানব সৃষ্টির শুরুর দিকে মানুষ কচু পাতা আর কলা পাতা দিয়ে ছাতার কাজ চালাতো। বৃষ্টি আর প্রচণ্ড রোদ হলেই প্রয়োজন হয় ছাতার। বৃষ্টিতে ছাতার কোনো জুড়ি নাই।
একসময় দেখা যেত গ্রাম গঞ্জে ফেরি করে ছাতা মেরামত করতে আসতো কারিগররা। আর মুহূর্তেই অস্থায়ী এই দোকানগুলোতে থাকতো উপচে পড়া ভিড়। এই পেশাতে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু সভ্যতার বিকাশের মাধ্যমে আর চোখে পরে না ছাতা মেরামত কারিগরদের। যেন পেশাটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছাতা মেরামত করছিলেন রমজান আলী। তিনি স্থানীয় এক চায়ের দোকানের সামনে তার অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসেছেন। হরেক রকমের ভাঙা ছাতা মেরামত করছেন।
ছাতা মেরামত করতে আসা শাকিল বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম বিভিন্ন পাড়ার মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামতের মিস্ত্রি পাওয়া যেতো। কিন্ত এখন আর ছাতা মিস্ত্রিদের চোখেই পড়ে না।
ছাতা মিস্ত্রি রমজান আলী বলেন, আমার বাড়ি মোহাম্মাদ পুর ইউনিয়নে। ছাতা মেরামত পেশা আমার বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পেশা। শহরের চোরাস্তা ও কালিবাড়িরভ রাস্তার ফুটপাতে থেকে কাজ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের কাজের হিড়িক পরে যেতো। আর এক মৌসুমে কাজ করেই চলতাম সারাবছর। কিন্ত এখন আর আগের মতো আয় রোজগার হয়না।
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে মানুষ এতটা সৌখিন ছিল না। একটা ছাতা দিয়ে যুগ পার করে ফেলত। আর এখন মানুষ একটা ছাতা বেশি দিন ব্যবহার করে না। একটু থেকে একটু সমস্যা হলেই নতুন ছাতা কিনে নেয়।
যেখানে আগে মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৪ থেকে ৫ টা বাজার বা এলাকা ঘুরলে একজন ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যায়। দিন যত যাচ্ছে ততই বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে এই পেশা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল