৭ আগস্ট, ২০২০ ১৭:১৫
সিরাজগঞ্জে বন্যায় তাঁতের ব্যাপক ক্ষতি

শতশত কারখানা বন্ধ: বেকার শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

শতশত কারখানা বন্ধ: বেকার শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে তাঁত কারখানা

বন্যায় সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্পের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সুতা, বিম, ত্যানা, নলি ও মোটরসহ সব পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁত প্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হওয়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক তাঁত মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

আর কাজ না থাকায় তাঁত শ্রমিকদের অবস্থাও করুণ। কর্ম না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তাঁতের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। এ অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তা দাবী করেছেন তাঁতিরা। 

জানা যায়, চার দফা দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরের প্রায় সকল গ্রাম তলিয়ে যায়। ফলে এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তাঁত কারখানাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় তাঁতিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জেলার প্রায় ১০ হাজার তাঁতের কাপড়সহ তাঁতের প্রধান উপকরণ সুতা-মাকড়-ত্যানা-মোটর ও নলি ও তাঁতগুলো সবকিছু নষ্ট হয়ে পড়েছে। 

অর্থের অভাবে মেরামত করতে না পারায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। আয় রোজগার না থাকায় এসব তাঁতিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শুধু তাঁত মালিক নয়-এর সাথে জড়িত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ায় তারাও অতিকষ্টে জীবনযাপন করছে। করোনা থেকে বন্যা টানা ৫ মাস বেকার থাকায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যতা তাদের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপাকে পড়েছেন তাঁতের সাথে জড়িত হাজার হাজার নারী পুরুষ। কাজ-কর্ম না থাকায় নিরানন্দ ঈদ উদযাপন করেছে এসব পরিবার।

সদর উপজেলার পুর্বমোহনপুর ও বাঐতারা গ্রামের তাঁতি নুরুল ইসলাম, ইয়াসিন ও কাওসারসহ অনেকে জানান, টানা দেড় মাস তাঁত কারখানাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল। ফলে তাঁতের সাথে লাগানো কাপড়, সুতা, মোটর সবকিছু নষ্ট হয়ে পড়েছে। তাঁত প্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। 

এ অবস্থায় সরকার সহায়তা না করলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। তাঁত শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে আয় রোজগার নেই। তার উপর বেসরকারি সংস্থাগুলো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। 

তাঁত শ্রমিকরা জানান, করোনা থেকে বন্যা টানা ৫ মাস কোনো কাজকর্ম নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি।

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ জানান, বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। সেখান থেকে সহায়তা পেলে তাঁতিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও বেসরকারি সংস্থাগুলোকেই ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করা হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/এজে

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর