ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৪টি পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। পাশাপাশি কাউন্সিল প্রার্থীরাও এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে মেয়র প্রার্থীতা নিয়ে বড় দু’দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে নতুন করে কোন্দল শুরু হয়েছে। তবে জামায়াত ভেতর ভেতর গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল ও গোমস্তাপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা নেমে পড়েছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। তবে এই প্রচারণার কাজে বিএনপি প্রার্থীদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। এদিকে, জেলা বিএনপি’র কমিটি নিয়ে দলীয় কোন্দল থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র প্রার্থীতা নিয়ে এই কোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। কারণ ইতিমধ্যে, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ হারুন এমপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্রার্থী হিসেবে ধানচাল ব্যবসায়ী মোঃ আনোয়ার হোসেনের নাম ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে, এই পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম টিপু।
এছাড়াও নাচোল পৌরসভার মেয়র হিসেবে বিএনপির নূর কামালের নাম স্থানীয় বিএনপি ঘোষণা করেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ মাসুদও প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। এনিয়ে বিএনপি’র মধ্যে অসেন্তাষ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্র নাম ঘোষণা করবে। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা গঠনতন্ত্রের লংঘন। ফলে দলে বিভ্রান্ত সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ মোখলেসুর রহমান ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন। এমনকি দলীয় কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগমও ঘটাচ্ছেন তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদের আশর্বাদ এবং পৌর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীকে সাথে নিয়ে কাজ করছেন তিনি। অপর সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন নিজের উপস্থিতি জানান দিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইনুদ্দিন মন্ডলকে পাশে রেখে কাজ করছেন।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ পৌরসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বৃহৎ একটি অংশকে সাথে নিয়ে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম। তিনি প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যা বিভিন্ন স্থানে উঠোন বৈঠকসহ গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি কয়েক হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রাও অব্যাহত রেখেছেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান পৌর মেয়র একসময় আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত কারিবুল হক রাজিনও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই পৌরসভায় বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে আশরাফুল আলম রশিদ ও সফিকুল ইসলাম এর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে তাদের দৃশমান নির্বাচনী প্রচারণা তেমন নেই। অপরদিকে নাচোল পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু। কিন্তু প্রচারণায় পিছিয়ে নেই যুবলীগ নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য রয়েল বিশ্বাসও।
অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থীদের প্রচারণা এখানে খুব একটা দৃশ্যমান নেই। এছাড়া গোমস্তাপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র মুহাঃ গোলাম রাব্বানী বিশ্বাস, জালাল উদ্দিন আকবর মুক্তি এবং মতিউর রহমান মতি খান প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানেও অন্য দলের প্রার্থীদের তেমন প্রচারণা দেখা যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ