কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট। চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
রবিবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস। এছাড়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও আজ তাপমাত্রা কমে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রবিবার লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ মাসে আরো একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে দেরিতে সূর্যের দেখা মিললেও তীব্র ঠান্ডার কারণে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। পর্যাপ্ত আলো না মেলায় কমছে না ঠান্ডার প্রকোপ। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশু ও বড়দের বিভিন্ন শীতজনিত রোগ বাড়ছে। হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বন্যায় বসতবাড়ি হারানো হাজারো মানুষ খোলা আকাশের নিচে অসহায় জীবনযাপন করছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে জেলার চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ।
স্টেশন এলাকার রিকশাচালক কোরবান বলেন, অতিরিক্ত ঠান্ডায় সকাল থেকে রিকশা বের করার সাহস পাইনি। যাত্রীও থাকে কম।
শিয়াল খোওয়া এলাকার বৃদ্ধ ফজল আলী বলেন, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে কোনো কাজকর্ম করতে পারছি না। ঠান্ডায় আমার মতো বৃদ্ধদের চলাফেরা করা কষ্টকর।
পৌর শহরের গোশলা বাজার এলাকার মেকার হারুন বলেন, খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডায় বসে কাজ করছি। দুদিন ধরে সর্দি ও জ্বরে ভুগছি।
চরবেষ্টিত মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা দুর্গম। এখানে প্রায় ১২টি চর রয়েছে। এসব চরে বসবাসকারী শীতার্ত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
মোগলহাট ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে ২৫০টি কম্বল আমার ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে পেয়েছি। তালিকা করে সেগুলো শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করেছি।
ডিসি মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, শীত নিবারণের জন্য প্রতিটি উপজেলায় ৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ এসেছে। এছাড়া জেলার কর্মহীনদের জন্য ১০ হাজার প্যাকেট খাদ্য শস্য পেয়েছি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উপজেলা মেডিকেল টিম ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই