শিরোনাম
১১ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৪৯

মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেন অদম্য ম্যাচোখেন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেন অদম্য ম্যাচোখেন

ম্যাচোখেন।

মেডিকেল (এমবিবিএস) কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আদিবাসী রাখাইন মেধাবী ছাত্রী ম্যাচোখেন। তিনি উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের অজপাড়া বৌলতলিপাড়া গ্রামে শৈশব ও কিশোর বয়সে সংগ্রাম করে বেড়ে উঠেছেন।

তিনি বরিশাল নগরীর বেপ্টিস্ট মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। সদ্য ঘোষিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ম্যাচোখেন কিশোরগঞ্জ জেলার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছে।

ম্যাচোখেন বলেন, বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বিল পেড়িয়ে খেচাওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিকের শিক্ষা নিতে যেতে হতো। বর্ষার ৬ মাস স্কুলেই যেতে পারতো না। তার বাবা রাখাইন কৃষক উচোথান, মা গৃহিণী খেওয়ান অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। প্রাথমিক সমাপনীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

এরপর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বরিশাল নগরীর বেপ্টিস্ট মিশন বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায় ম্যাচোখেন। একইভাবে চলতি সালে মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেন। স্কুল শিক্ষক এবং কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতার কথা অকপটে স্বীকার করেন শিক্ষার্থী ম্যাচোখেন। 

তিনি জানান, তার ইচ্ছে রাখাইন জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দেওয়ার। কেননা রাখাইনরা বাংলায় ততোটা দক্ষ নন।

বাবা রাখাইন কৃষক উচোথান বলেন, মেয়ের আগ্রহ ও স্বপ্ন যাতে নষ্ট না হয়, তাই তার মা অবসরে টেইলারিং’র কাজ করে এবং তিনি নিজে আগাম সবজি চাষ করে আয় বাড়াতেন। ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ায় অদম্য ছিল তার কন্যা।

এ বিষয়ে রাখাইন উন্নয়নকর্মী প্রকৌশলী ম্যাথুজ বলেন, রাখাইন সম্প্রদায় থেকে ম্যাচোখেন দ্বিতীয় শিক্ষার্থী হিসেবে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এর আগে ১৯৭২ সালে তালতলী উপজেলার আগাঠাকুরপাড়া থেকে এক ছাত্রী মেডিকেলে চান্স পেয়ে ডাক্তার হয়েছিল। ম্যাথুজ আরও বলেন, ম্যাচোখেন আমাদের সম্প্রদায়ের সম্পদ। এ প্রজন্মের রাখাইন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগাবেন ম্যাচোখেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর