মাদারীপুরে আইসক্রিম কিনতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী অপহরণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার। অপহরণের তিন দিন কেটে গেলেও পুলিশ এখনো তার সন্ধান পায়নি।
জানা যায়, গত ২৪ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে একটি দোকানে আইসক্রিম কিনতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয় ওই স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে স্কুলছাত্রীর মা নারগিস সুলতানা সদর মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় সদর হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকার মাহমুদুল হাসান ওরফে মিলন (২৩) নামে এক যুবককে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া তার ভাই মেহেদী ঢালী (১৯), বাবা মফিজুর রহমান ঢালী (৫৫) ও মা সাহিনা বেগমসহ অজ্ঞাত আরও ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় গত রবিবার দিবাগত রাতে অপহরণের মূলহোতা মাহমুদুল হাসানের বাবা মফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ। বর্তমানে আদালতের মাধ্যকে তিনি কারাগারে আছেন। এরপরেও তার ছেলে অপহরণের মূলহোতা মাহমুদুলের কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, অপহরণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর বয়স ১৬ বছর। সে মাদারীপুর শহরের ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। প্রায় এক বছর ধরে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে মাহমুদুল হাসান ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি ওই স্কুলছাত্রী তার পরিবারকে জানালে তারা ওই যুবকের পরিবারকে জানায়। এরপর কিছুদিন ওই স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত না করলেও সম্প্রতি আবারও নানাভাবে উত্ত্যক্ত শুরু করে মাহমুদুল।
মাহমুদুলের প্রস্তাবে সারা না দেওয়ায় ওই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করার হুমকিও দেওয়া হয়। এরপরেই ২৪ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে একটি দোকানে আইসক্রিম কিনতে যায় ওই স্কুলছাত্রী। এসময় পথে একটি মাইক্রোবাসে কয়েকজন যুবক এসে ওই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ‘আমাদের বাড়ির সামনে থেকে আমার মেয়েটাকে ওরা জোড় করে তুলে নিয়ে গেলো। আমি অনেক চিৎকার করেও ওদের আটকাতে পারি নাই। অপহরণের তিন দিন হয়ে গেলো এখনো আমার মেয়ের কোনো খোঁজ মেলেনি। মেয়েটি কোথায় আছে, কেমন আছে তা কেউ বলতে পারছে না!’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক দিপংকর রোয়াজা বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর থেকেই আমরা বেশ কয়েকটি জায়গায় উদ্ধার অভিযান করেছি। আমরা অভিযুক্ত মাহমুদুলের বাবাকে গ্রেফতারও করেছি। মূল আসামি ও ভিকটিমকে এখনো আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। ঘটনার পর থেকেই মাহমুদুলের মোবাইল নম্বর বন্ধ। এরপরেও তাদের উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি খুবই দ্রুতই মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করতে পারবো।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই