বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের বিলুপ্ত প্রজাতির দুটি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপের ডিম থেকে ৩৭টি বাচ্চা ফুটেছে। শুক্রবার বিকালে প্রজনন কেন্দ্রে পুকুর পাড়ে প্রাকৃতিক উপায়ে বালুর মধ্যে রাখা দুটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৫০টি ডিম থেকে একে-একে ৩৭টি বাচ্চা ফুটে বের হয়ে আসে। এসব বাচ্চা এখন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের প্যানে রাখা হয়েছে।
চলতি প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এবার ৪টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৯৬টি ডিম পাড়ে। এরমধ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রথম একটি মা কচ্ছপ ২৭টি ডিম পাড়ে। এরপর ৩ মার্চ রাতে একটি মা কচ্ছপ ২৩টি ডিম পাড়ে। এসব ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে প্রাকৃতিক উপায়ে বালুর মধ্যে রাখা হয়। ডিমগুলো থেকে ৬৫ থেকে ৬৭ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটার কথা থাকলেও এবছর অত্যাধিক তাপদাহে ফলে যথাক্রমে ৬২ ও ৫৯দিনে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বাটাগুর বাসকা প্রজাতির অপর ২টি কচ্ছপ ৫ মার্চ ২৩টি ও ২০ মার্চ ২৩ ডিম পাড়ে। ওই ৪৬টি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে প্রাকৃতিক উপায়ে বালুর মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সুন্দরবন বিভাগ।
সুন্দরবনের করমজলের বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, ২০০০ সাল থেকে পৃথিবীতে খুজে না পাওয়া বিলুপ্ত প্রজাতির ৮টি বাটাগুর বাসকা কচ্চপ ২০০৮ সালে আমাদের দেশের নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে সন্ধান মেলে। এই ৮টি বাটাগুর বাসকার মধ্যে ছিল ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। ২০১৪ সালে ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি বাচ্চা করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ২০১৭ সালে প্রথম দু’টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা জন্ম নেয়। এরপর ২০১৮ সালে দু’টি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা, ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা, ২০২০ সালের ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা জন্ম নেয়। ইতিমধ্যে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে থেকে ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫টি বাটাগুল বাসকা কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করা হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল